মাদারিহাট: হলং কাণ্ডে (Hollong bungalow fire) জোরকদমে তদন্ত শুরু করল বন দপ্তর। বৃহস্পতিবার সকালে বনবাংলোর ধ্বংসস্তূপ পরিদর্শন করতে আসেন রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল দেবল রায়। সকাল ৯টা থেকে প্রায় ৪ ঘণ্টা সেখানে ছিলেন তিনি। পরিদর্শনের পর জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার দিন সেই বাংলোয় কয়েকজন রেঞ্জ অফিসার ছিলেন। তবে তাঁরা চলে যাওয়ার পরই আগুন লাগে।
তাঁর সঙ্গে ছিলেন উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল ভাস্কর জেভি ও জলদাপাড়ার বনাধিকারিক পারভীন কাসোয়ান। সবকিছু খুঁটিয়ে দেখেন দেবল। বাংলোর কর্মীদের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলেন। এরপর দুপুর একটা নাগাদ বেরিয়ে যান। যাওয়ার সময় হলং গেটের সামনে জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ইলেক্ট্রিক শর্টসার্কিট থেকেই আগুন লেগেছিল। তাঁর কথায়, ‘ফরেন্সিক দলের রিপোর্ট পেলেই ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যেতে পারে। তবে নাশকতার কোনও ঘটনা হয়নি।’
দেবলের মতামত, ‘আগুন লেগেছিল উপরের তলার একটি ঘরে। যদি কেউ লাগিয়ে দিত, তবে নীচ থেকে আগুন লাগাত। সেইজন্য আমরা এই ব্যাপারে নিশ্চিত। আর আগুন লাগার পর এসি মেশিনগুলি ফেটে গিয়ে আগুন আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠে। কারণ এসির ভেতর যে গ্যাস থাকে তা খুব দাহ্য।’
ঘটনার আগে সেইদিন দু-তিনজন রেঞ্জ অফিসার হলং বাংলোর ঘরের ভেতর ছিলেন। তাঁরা কী করছিলেন, এসি চালিয়েছিলেন কি না এসব প্রশ্ন উঠেছে। এপ্রসঙ্গে দেবল বলেন, ‘দুইজন রেঞ্জ অফিসার ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন বলে জানতে পেরেছি। তবে তাঁরা চলে যাওয়ার অনেক পরে আগুন লেগেছিল।’
সেই ঘটনার পর হলং বাংলোর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বনকর্তারা জানিয়েছেন, সেখানে তিন ক্যাটিগোরির অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল। কিন্তু ঘটনার দিন ঘর ধোঁয়ায় ঢেকে যাওয়ার জন্য বনকর্মীরা ভেতরে যেতেই পারেননি। এদিন হলংয়ে ডেকে নেওয়া হয়েছিল মাদারিহাটের একজন ইলেক্ট্রিশিয়ানকে। তাঁর কাছে এসির ব্যাপারে জানতে চেয়েছেন বনকর্তারা। আবার কি আগের আদলেই কাঠ দিয়ে বাংলোটি তৈরি করা হবে? এব্যাপারে প্রধান মুখ্য বনপাল কিন্তু স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। দেবল বলেন, ‘এব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হবে।’ এদিকে এদিন হলং বাংলোয় ঢোকার চেষ্টা করেন সাংসদ মনোজ টিগ্গা। তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন।