চাঁদকুমার বড়াল ও পূর্ণেন্দু সরকার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি: ট্রেনের চাকার বল বিয়ারিংয়ের যান্ত্রিক ত্রুটি ধরতে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের (Northeast Railway) তরফে বেশ কয়েকটি স্টেশনে ‘হট অ্যাক্সেল বক্স ডিটেক্টর যন্ত্র’ (Hot Axle Box Detector Device) বসানো হল। দূরপাল্লার যাত্রীবাহী ট্রেন ও মালগাড়ির চাকার অ্যাক্সেল পরীক্ষার জন্য এই অত্যাধুনিক যন্ত্রটি বসানো হয়েছে। উত্তরবঙ্গের মধ্যে এখনও পর্যন্ত এনজেপিতে (NJP Station) ৪টি হট অ্যাক্সেল বক্স ডিটেক্টর যন্ত্র বসানো হয়েছে। এর ফলে এখন থেকে আর যাত্রীবাহী এবং পণ্যবাহী ট্রেনগুলোতে অ্যাক্সেল গরম হয়ে আগুন লাগা এবং তার থেকে বড় বিপদের আশঙ্কা থাকবে না।
হট অ্যাক্সেল কী? পাশাপাশি কীভাবে কাজ করবে এই যন্ত্র? রেল আধিকারিকরা বলছেন, ট্রেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলার সময় তার বল বিয়ারিংগুলো খারাপ হয়ে যায়। তখন অ্যাক্সেলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এটিকে হট অ্যাক্সেল বলে। এটি সম্পূর্ণ সেন্সরভিত্তিক যন্ত্র। বিভিন্ন স্টেশনে ঢোকার মুখে তা বসানো হয়েছে। স্টেশনে ঢোকার মুখে যেখানে ট্রেনের রোলিং বা চাকার গতি পরীক্ষা হয় সেখানে যন্ত্রটি থাকবে। চলন্ত ট্রেনে ওই যন্ত্রই হট অ্যাক্সেল চিহ্নিত করবে। সেইসঙ্গে নিকটবর্তী বড় স্টেশনের রেলকর্মীদের জানান দেবে। বড় স্টেশনে লোকবল থাকায় সেখানকার স্টেশনমাস্টারের রুমে বক্স থেকে মেসেজ যাবে। তারপর সমস্যা থাকা ট্রেনটি থামিয়ে সেখানে তার পরীক্ষা করা হবে। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা করা হবে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের তরফে গুয়াহাটি, রাঙ্গাপাড়া, কামাখ্যা, কাটিহার, নিউ বঙ্গাইগাঁওতে এই যন্ত্র বসানো হয়েছে। আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের নিউ কোচবিহার স্টেশনে ঢোকার মুখে এবং শামুকতলা স্টেশন ঢোকার মুখে দুটো বক্স লাগানো হয়েছে।
এনজেপিতে ৪টি এই ধরনের যন্ত্র বসানো হয়েছে। এই হট অ্যাক্সেল ডিটেক্টর বক্স দিয়ে ২০২১-’২২ সালে ৯টি, ২০২২-’২৩ সালে ১৪টি এবং ২০২৩-’২৪ সালে ১টি ঘটনা শনাক্ত করা গিয়েছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থায় হট অ্যাক্সেল ডিটেক্টর বক্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই অত্যাধুনিক ব্যবস্থা কার্যকর করতে জোরদার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রেলের সুরক্ষার বাইরে ট্রেন চালানোর সময়ে নিয়মানুবর্তিতা আনা এবং রেলের ক্ষতি আটকানো প্রধান উদ্দেশ্য। এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এতে ট্রেন এবং যাত্রীদের আরও সুরক্ষা বাড়বে।’