কোচবিহার: ‘বিজেপি (BJP) করার জন্য তৃণমূল (TMC) আমার বাড়িঘর ভাঙচুর করছে। আমার মেয়েদের ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে। সেকারণে ঠিক করেছি এখন থেকে তৃণমূল করব। দেখি কী পাই।’ জেলা তৃণমূল সভাপতির পাশে বসে নির্ভয়ে কথাগুলো বলে গেলেন প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী! সেই ঘটনার ভিডিও মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (BJP MP Sukanta Majumdar) লিখলেন, ‘রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও ব্যক্তি স্বাধীনতাকে এভাবেই ধ্বংস করছে তৃণমূল।’
সোমবার বিকেলে কোচবিহার (Coochbehar) জেলার নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির মিছিলে যোগ দেন নাটাবাড়ির কেন্দ্রের বিজেপির মহিলা মোর্চার ৫ নম্বর মণ্ডল সভাপতি জবা দেবনাথ। মিছিল শেষ হতেই সময় অপচয় না করে তিনি সোজা চলে যান তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ে। সেখানে জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিয়ে যোগ দেন ঘাসফুল শিবিরে। তাঁর এমন সিদ্ধান্ত অবাক করে সকলকে। তবে তাঁর সিদ্ধান্তের থেকেও বেশি অবাক হবেন কেন তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন সেই কারণ শুনলে। তাঁর কথায়, ‘এতদিন আমি বিজেপি করতাম। বিজেপি করার জন্য তৃণমূল আমার বাড়িঘর ভাঙচুর করছে। মেয়েদের ধর্ষণ করার হুমকি দিচ্ছে। সেকারণে ঠিক করেছি এখন থেকে তৃণমূল করব। দেখি কী পাই।’ এদিকে পাশে বসে থাকা তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক জবা দেবনাথের এমন অকপট বক্তব্য শুনে প্রথমে খানিক অস্বস্তিতে পড়ে যান। পড়ে অবশ্য বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের নাম ভাঙিয়ে এসব কাণ্ড করেছে বিজেপি।’
এদিকে কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতির এই বক্তব্য কানে যেতেই এদিন আসরে নামেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। জবা দেবনাথের বক্তব্যের ভিডিও এক্স হ্যান্ডেলে (X-Handle post) পোস্ট করে রাজ্যের শাসক দলের ‘সন্ত্রাস’-এর ছবি তুলে ধরেছেন তিনি। সঙ্গে রাজ্যের মানুষকে বুঝিয়েছেন, ভয়ের কাছে মাথানত করে মানুষ তৃণমূলকে ভোট দেয়। যদি ছবিটা এমন না হতো তাহলে বাংলার মানুষ বিজেপিকেই বেছে নিত।
তবে যাকে নিয়ে এত কথা, মানে জবা দেবনাথ তাঁর কিন্তু শাসকদলে যোগ দিতেই পুরস্কার মিলেছে। যোগদানের খানিক বাদেই তাঁকে তুফানগঞ্জ–১ ‘এ’ ব্লকের তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের ব্লক সহ সভানেত্রীর পদ দেওয়া হয়। কিন্তু শাসকদলের এই উপহারে তিনি কি আদৌ খুশি? তার জবাব কিন্তু এখনও দেননি প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী থুড়ি তুফানগঞ্জ–১ ‘এ’ ব্লকের তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের ব্লক সহ সভানেত্রী জবা দেবনাথ।