সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০২৫

Down Syndrome | ডাউন সিনড্রোম চিনবেন যেভাবে

শেষ আপডেট:

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ডাউন সিনড্রোম (Down Syndrome) একটি জেনেটিক অবস্থা, যার কোনও প্রতিকার সম্ভব নয়। এই রোগ মস্তিষ্ক ও তার অন্তর্নিহিত কোষ ও কলাকে প্রভাবিত করে। তাই ঝুঁকি নিতান্তই বেশি। ছয়ের দশকে এর শতকরা হার ৫০ শতাংশ এবং বর্তমানে তা আরও বেড়েছে। লিখেছেন বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের মনোবিদ দেবিশ্রী মুখোপাধ্যায়

সাধারণত ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতিটি দেহকোষের ২১তম ক্রোমোজোমে একটি অতিরিক্ত ক্রোমোজোমের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়, যাকে ট্রাইসোমি ২১ বলা হয়। অন্যদিকে, মোজাইক ডাউন সিনড্রোমের হার ১ শতাংশেরও কম। কোষে ৪৭টি ক্রোমোজোম থাকলে এটি হয়ে থাকে। অতিরিক্ত  পূর্ণ বা আংশিক ক্রোমোজোম এই রোগের ঝুঁকিতে অবদান রাখে। ক্রোমোজোম ২১-এর জিনগুলি অ্যামাইলয়েড নামে এক প্রোটিন তৈরি করে যা এই রোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কারণ

ট্রাইসেমি ২১আমাদের প্রতিটি কোষে যে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে তাদের একটি শুক্রাণু এবং অপরটি ডিম্বাণু থেকে আসে। ২১ নম্বর ক্রোমোজোমের তিনটি অনুলিপি থাকার কারণে এই অবস্থাটিকে ট্রাইসেমি২১ বলে।

ট্রান্স লোকেশনএই অবস্থায় ২১ নম্বর ক্রোমোজোমটি অন্য ক্রোমোজোমের সঙ্গে যুক্ত থাকে।

চেনার উপায়

  • ডাউন সিনড্রোমের শিশুদের মাংসপেশির শিথিলতা, কম উচ্চতা, চোখের কোনা ওপরের দিকে ওঠানো, চ্যাপ্টা নাক, ছোট কান, হাতের তালুতে মাত্র একটি রেখা, জিভ বের হয়ে থাকা, দুর্বল পেশি ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
  • এছাড়া কানে কম শোনা, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, কথা বলতে দেরি হওয়া,সামাজিক ও মানসিক সমস্যা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া প্রভৃতি জটিলতা দেখা দেয়।
  • অনেক সময় ডাউন সিনড্রোমের সঙ্গে জন্মগত হার্টের সমস্যা, থাইরয়েডের সমস্যা, দঁাতের সমস্যাও থাকতে পারে।

যদি আপনি জানতে পারেন ভ্রূণের ডাউন সিনড্রোম রয়েছে তাহলে কিছু স্ক্রিনিংয়ের সাহায্য নিতে হবে –

প্রসবপূর্ব স্ক্রিনিংঃ আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষাটি ডাউন সিনড্রোমের লক্ষণ নির্ধারণে সহায়তা করে।

গর্ভাবস্থায় ডায়াগনস্টিক পরীক্ষাঃ এর মাধ্যমে ভ্রূণের অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়। এই পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে অ্যামনিওসেন্টেসিস এবং কোরিওনিক ভিলাস স্যাম্পলিং (সিভিএস)। জন্মের পর ডাউন সিনড্রোম ক্যারিওটাইপ পরীক্ষার সাহায্যে নির্ধারিত হয়।

চিকিৎসাঃ এই রোগটির কোনও নির্দিষ্ট প্রতিকার নেই। তবে শারীরিক ও মানসিক দিক উন্নত করার জন্য থেরাপির সাহায্য নেওয়া হয়। এরমধ্যে রয়েছে – ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি, প্লে থেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি, ভোকেশনাল থেরাপি।

নিয়ন্ত্রণে রাখতে

  • বাচ্চার জন্মের পর ডাউন সিনড্রোম আছে জানতে পারলে বিভিন্ন সহায়তা গোষ্ঠী ও কাউন্সেলিংয়ের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
  • সময়মতো পরিচর্যা ও চিকিৎসার মাধ্যমে হরমোনজনিত জটিলতা সহ অন্যান্য শারীরিক সমস্যা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
  • উপযুক্ত পরিবেশ ও বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে বড় করতে পারলে এই শিশুরা কর্মক্ষম হয়ে অর্থবহ জীবনযাপন করতে পারে।

ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত বাচ্চাদের অ্যালজাইমার্স হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কারণ, এই রোগ মস্তিষ্ক ও তার অন্তর্নিহিত কোষ ও কলাকে প্রভাবিত করে। ষাটের দশকে এর শতকরা হার  ছিল ৫০ শতাংশ এবং বর্তমানে তা আরও বেড়েছে।

Shahini Bhadra
Shahini Bhadrahttps://uttarbangasambad.com/
Shahini Bhadra is working as Trainee Sub Editor. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Online. Shahini is involved in Copy Editing, Uploading in website.

Share post:

Popular

More like this
Related

Healthy Soup | ডায়াবিটিসের কারণে বাদ অনেক খাবারই, তবে স্বাদ বদলাতে খেয়ে দেখতে পারেন এটি…

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: শর্করাজাতীয় খাবার দূরে রাখতে গিয়ে...

Fenugreek Seeds | মেথি ভেজানো জল খাওয়া ভালো, সেই সঙ্গে বীজগুলিও খেয়ে নিলে মিলবে উপকার

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: পেট ঠান্ডা রাখতে মেথি ভেজানো...

Onion | গরমে খাবার পাতে অবশ্যই রাখুন কাঁচা পেঁয়াজ, এতে কী কী উপকার হবে?

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বাড়িতে আর কোনও সবজি থাক...

Jackfruit seeds | ফেলে দেবেন না কাঁঠালের বীজ, এর কী কী গুণ রয়েছে জানুন…

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: কাঁঠালের তো গুণ রয়েছেই। সেই...