উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: এই পৃথিবী যত সুন্দর আমাদের মন চায় তাকে আরো সুন্দর করে রাখি, ধরে রাখি নিজের মনের গহীনে ,শরীরের চাকচিক্যে, অজস্র মণি-মাণিক্যের দ্যুতিতে। আর সেটা করতে গিয়ে আমরা কখনও চর্চা করি শরীরের আবার কখনো গয়নার, কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দুটো একসাথে করি না, ফলে ত্বক ঠিক থাকলে গয়না হয় অনুজ্জ্বল , আবার গয়না উজ্জ্বল হলে ত্বক ময়লা। আজ গয়নাকে ঝলমলে করার টিপস আলোচনা করবো আপনাদের সাথে…
১) বাঙালি হোন বা অবাঙালি; মেয়েরা হাতে চুড়ি, সোনার বালা, শাঁখা-পলা বাঁধানো, নোয়া বাঁধানো পরেন এবং কাজ ও দূষণ সহ অযত্নে এগুলো কালো হয়, নোংরা জমে উজ্জ্বলতা হারায়। তাহলে কি গয়না পরাই বাদ দেবেন? না না তাই কি হয় ! নোংরা সাফ করতে হবে আর তার জন্য প্রথমেই হ্যান্ডওয়াশ বা শ্যাম্পু উষ্ণ গরম জলে ফেলে গয়না গুলো ডুবিয়ে রাখুন সারারাত। পরের দিন অব্যবহৃত টুথব্রাশে টুথপেস্ট লাগিয়ে গয়না গুলো ভালো করে ঘষে নিন, খাঁজগুলো ভালো করে ঘষে হলুদ গুঁড়ো ব্রাশে লাগিয়ে আবারো একবার ঘষে নিন। পরিষ্কার জলে ধুয়ে খোলা হাওয়ায় শুকিয়ে নিলেই গয়না ঝকঝকে।
২) জাঙ্ক জুয়েলারির কিন্তু আবার অন্য নিয়ম। শীতকালে তো এইসব গয়না পরে কোনই অসুবিধে নেই , ব্যবহার করে মুছে প্যাকিং করে রাখলেই হবে । গরম কালে বিশেষ করে ঘাম হয় যাঁদের তাঁরা একটু সাবধানেই এই গয়নাগুলো পরবেন। ঘাম লেগে রং উঠে যেতে পারে, গলায়- ঘাড়ে ইনফেকশন হয়ে চুলকোতে পারে, সেক্ষেত্রে গয়না পরার আগে পাউডার ভালো করে ছড়িয়ে দিন গলায়-ঘাড়ে , অপেক্ষা করুন ৩-৪ মিনিট তারপর পরুন। ফিরে এসে গয়নাগুলোকে সুতির কাপড় দিয়ে মুছে হাওয়া লাগিয়ে প্যাক করে রেখে দিন, মেকআপ তুলে টোনার লাগানোর সময় গলায়-ঘাড়ে একটু বেশি সময় ধরে তুলো দিয়ে চেপে চেপে লাগান , শুকিয়ে নিন , সম্ভব হলে বরফ দিন। অ্যাণ্টিসেপ্টিক লোশন বা ক্রিম লাগান।
৩) এখন তামার ওপর সোনার জল করা গয়নার খুবই চাহিদা, কিন্তু ব্যবহারের পর তার প্যাকিঙের ওপর নজর দিতে হবে। গয়না সুতি কাপড়ে মুছে নিয়ে অন্য সুতির কাপড়ে মুড়িয়ে রাখতে হবে ভেলভেট বক্সে বা প্লাস্টিকের পাউচে। কাগজের বক্সেও রাখতে পারেন তুলো দিয়ে বা কাপড়ে জড়িয়ে।
৪) পাথর সেটের গয়নার জন্যে নীচের দিকে তুলোর প্যাড আর পাথরের দিকটা কিন্তু অবশ্যই সুতির কাপড়েই ঢাকতে হবে, নইলে পাথরের ফাঁকে তুলো আটকে থাকতে পারে। একই নিয়ম কুন্দনের গয়নার জন্যেও।
৫) আভিজাত্যের নিরিখে মুক্তোর গয়না এক নম্বরে। এই মুক্তোকেও ভালো রাখাটা আপনারই হাতে। গয়নায় পারফিউম বা সুগন্ধি স্প্রে কখনই করবেন না , খারাপ হবে মুক্তোর কোয়ালিটি আর রং। বাকি সব যত্ন আগের মতই।
৬) রোজ – হোয়াইট – ইয়েলো গোল্ড পলিশ, সিলভার পলিশ, অক্সিডাইজড পলিশ করা গয়নায় জল বা ঘাম লাগলে রং তো উঠবেই সাথে দানাদানা গোটা বা চাকাচাকা লাল দাগ হতে পারে । অনেকেরই এই ধরণের মেটাল বেসের গয়নায় অ্যালার্জি হয়, অভ্যাস না থাকলে এই গয়না না কেনাই ভালো।
৭) সবশেষে রূপোর গয়নার পালা। খাড়ু, বাজু, পৈঁচে, বালা,চেইন, নূপুর, সিঁদুর কৌটো, খোঁপার কাঁটা, চিরুণি, পুজোর বাসন আগেকার দিনে এগুলো রূপোর ব্যবহার করা হতো, এখন আর সেভাবে হয়না , কিন্তু কিছু তো ব্যতিক্রম আছেই ; আর সেগুলোই যখন কালো হয়ে যায় তখন আর পরতে মন চায়না। এই সমস্যা সমাধান করবে ‘এক চুটকি সিন্দুর’। যে গুঁড়ো সিঁদুর এখন পুজো আর বিয়ে ছাড়া অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে , সেইই করবে মুশকিল আসান । পরিষ্কার শুকনো কাপড়ে সিঁদুর নিয়ে যে গয়না বা বাসন পরিষ্কার করবেন সেগুলো ঘষতে থাকুন , কালো কালো হয়ে ময়লা উঠে আসবে আর গয়না হবে ঝকঝকে , তারপরে সাবান জলে ধুয়ে নিলেই গয়না নতুন ।