পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন থেকে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) শহরতলির এলাকায় বাড়ি বাড়ি পাইপে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু করল হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড (এইচপিসিএল)। জলপাইগুড়ি শহর এবং শহরতিলর কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকা মিলিয়ে ৩০ হাজার সংযোগ দেওয়া হবে। প্রথম দু’দিনে কোতোয়ালি থানার পাতকাটা পঞ্চায়েত এলাকায় ১০টি বাড়িতে পাইপলাইনে গ্যাস পৌঁছে দিয়েছে ওই সংস্থা। এলপিজির ব্যবহারের চেয়ে পাইপ ন্যাচারাল গ্যাস ব্যবহারে গৃহস্থের খরচ অনেক কমবে। এইচপিসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গে জলপাইগুড়ির পাতকাটা এলাকায় বাড়ি বাড়ি সংযোগ দিয়েই প্রকল্পের কাজ শুরু হল।
পাতকাটা ও পাহাড়পুর পঞ্চায়েত ছাড়াও জলপাইগুড়ি পুর এলাকা এবং খড়িয়া পঞ্চায়েতের কিছু এলাকায় বাড়ি বাড়ি পাইপড ন্যাচারাল গ্যাস (পিএনজি)-র সংযোগ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে শেষ করবে সংস্থাটি।
এইচপিসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, এলপিজি সিলিন্ডারে যে রান্নার গ্যাস থাকে সেটি তরল আকারে থাকে। তার মধ্যে বিউটেন ও প্রোপেন থাকে। কিন্তু পাইপড ন্যাচারাল গ্যাসে থাকে মিথেন। এটা প্রাকৃতিক গ্যাস। এলপিজির থেকে অনেক বেশি নিরাপদ ও সুরক্ষিত পিএনজি। পিএনজি গ্যাসে চাপ কম থাকে। বাতাসের থেকেও হালকা। ফলে পাইপলাইনে কোথাও লিকেজ হলেও পিএনজি বাতাসে দ্রুত মিশে যায়। ফলে বিপদ থাকে না। অন্যদিকে, এলপিজিতে চাপ বেশি থাকে এবং লিক করলে বিপজ্জনক অবস্থা তৈরি হতে পারে। তাছাড়া পিএনজি ব্যবহারে কার্বন কম বের হয়।
পাতকাটা এলাকার বাসিন্দা জাহিরুন্নেসা বলেন, ‘রান্নাঘরে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাসের সংযোগ এসেছে। অনেক সুরক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। নিজের চাহিদামতো গ্যাস ব্যবহার করতে পারব। ইলেকট্রিকের মতো মিটার বসানো হয়েছে। ইউনিট পিছু গ্যাস ব্যবহারের উপর দাম দিতে হবে।’
পাতকাটার আর এক বাসিন্দা শাহির আলি বলেন, ‘এলপিজি সিলিন্ডার নিয়ে আসার পর অনেক সময় রেগুলেটর ঠিকমতো লাগে না। অনেক সময় রেগুলেটর দিয়ে গ্যাস লিক করে। নতুন ন্যাচারাল গ্যাসে সেইসব সমস্যা নেই। তবে এক মাস ব্যবহার করার পর খরচ কতটা কম হচ্ছে, সেটা দেখার বিষয়।’
এইচপিসিএলের উত্তরবঙ্গের চিফ ম্যানেজার চারণ্য কুমার জানান, জলপাইগুড়ি শহর ও শহরতলির মোট ৩০ হাজার বাড়িতে পিএনজি সংযোগ দেওয়া হবে। এরপর ময়নাগুড়ি ও মালবাজারেও পাইপলাইন মাটির নীচে বসিয়ে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হবে। পুরো জেলাতেই এইচপিসিএল বাড়ি বাড়ি পিএনজি সংযোগ দেবে। উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলাতেও পাইপলাইন পাতার কাজ এলাকাভিত্তিক শেষ পর্যায়ে। পিএনজি-র ব্যবহারে জ্বালানির খরচ এলপিজি থেকে মাসে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমবে। ওভেনের বার্নারে উজ্জ্বল আগুন জ্বলে। সুরক্ষা ব্যবস্থাও সুনিশ্চিত। ২৪ ঘণ্টা যখন ইচ্ছে গ্যাস পাবেন গৃহস্থ। লিক করার ভয় নেই। একাধিক লকিং ব্যবস্থাও রয়েছে।