মালবাজার: বাবার বড় সাধ ছিল মেয়ের উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল দেখবে। আজ বাবা নেই। মাল নদীর বিসর্জন ঘাটে মহা দশমীর রাতে হড়পা বানে চিরতরে হারিয়ে গেছেন বাবা শুভাশীষ রাহা (গেদু)। বুধবার উচ্চমাধ্যমিকে মেয়ের ফল বেরোল। মাল আদর্শ বিদ্যাভবনের ছাত্রী সৃজা রাহা ৪২৯ নম্বর পেয়েছে। ভালো ফলের পরেও রাহা বাড়িতে কিন্তু একরাশ শূন্যতা। মোবাইলেই পরীক্ষার ফল দেখেছে শ্রীজা। আঁকড়ে রেখেছে বাবার ছবি।
শ্রীজা মাল আদর্শ বিদ্যাভবনের বিজ্ঞানের ছাত্রী। বাংলা -৮২, ইংরেজি- ৯১, জীববিদ্যা- ৯১, পদার্থবিদ্যা- ৮৩, রসায়ন- ৮২, এবং গণিত- ৭৭। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায় শ্রীজা। সে জানায়, করোনার সময় মাধ্যমিক ছিল। সরাসরি পরীক্ষা দিতে হয়নি। মাধ্যমিকে ৬৭৩ নম্বর পেয়েছিলাম। সেইসময় বাবা নম্বরে খুশি হয়েছিল। তবে বলেছিল উচ্চমাধ্যমিকে আরও ভালো ফল করতে হবে। দেখব কত নম্বর পাস! এই বলে শ্রীজার চোখে জল। শ্রীজার কথায়, ‘বাবাকে ভুলব কি করে? বাবা রেজাল্টই আর দেখতে পারল না। আমার আরও ভালো নম্বর পাওয়ার কথা ছিল।‘
মা অর্চনা রাহা কার্যত বাকরুদ্ধ। অশ্রুসিক্ত অর্চনা দেবী বললেন, ‘ওর বাবা চলে যাওয়ার পরে আমাকেই দোকান সংসার সব সামলাতে হয়েছে। ওর পড়ার দিকে বেশি নজরই দিতে পারিনি।‘ শ্রীজার দাদা সুশোভন এখন মালের বিডিও কার্যালয়ে কর্মরত। তিনি বলেন, ‘ও লড়াই জারি রেখেছে। যতটা পেরেছে চেষ্টা চালিয়েছে। শ্রীজা ভালোই জানে আরও অনেক পথই চলা বাকি। তাই শূন্য ঘরেও আগামীর পথ খোঁজার চেষ্টা এখন থেকেই শুরু করেছে সে।‘