দুবাই: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কাশ্মীরকে হাতিয়ার করে ভারতকে খোঁচা দেওয়ায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের পদক্ষেপ আটকে দিল আইসিসি। ইসলামাবাদ থেকে শুরু হয়ে মেগা ইভেন্টের সুদৃশ্য ট্রফি পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে পরিক্রমা করবে। সূচিতে রয়েছে পাক অধীকৃত কাশ্মীরের তিনটি শহর-স্কার্দু, হুনজা, মুজাফফরাবাদ।
ভারত যদিও বরাবর পাকিস্তানের অধীকৃত কাশ্মীরকে (পিওকে) নিজেদের অংশ বলে দাবি করে এসেছে। বুঝেশুনে ভারতকে অস্বস্তিতে ফেলতে ‘পিওকে’-কে ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছিল পিসিবি। গতকাল সামাজিক মাধ্যমে ঘটা করে তা ঘোষণাও করে দেয়।
যদিও ভারতের প্রবল বিরোধিতায় পাক-পরিকল্পনা বাতিল। ভারতীয় বোর্ডের সচিব তথা আইসিসি-র পরবর্তী সভাপতি জয় শা সমালোচনায় মুখর হলে নড়েচড়ে বসে ক্রিকেট বিশ্বের নিয়ামক সংস্থা। শেষপর্যন্ত পাক অধীকৃত কাশ্মীরে ট্রফি পরিক্রমা সূচি বাতিল করে দেয়।
বিসিসিআইয়ের এক শীর্ষকর্তা বলেছেন, ‘ট্রফি পরিক্রমা সূচিতে পিওকে-র বিভিন্ন শহর রাখা নিয়ে মুখর হন জয় শা। আইসিসি-র কাছেও অভিযোগ জানান। তাছাড়া ট্রফি পরিক্রমার বিষয়টি পুরোপুরি আইসিসি-র বিষয়। পিসিবি-র কোনও এক্তিয়ার নেই।’
বৃহস্পতিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পাকিস্তানের মাটিতে এসে পৌঁছোয়। ১৬ নভেম্বর থেকে ট্রফি-পরিক্রমা শুরু হবে দেশজুড়ে। চলবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত। পাক অধীকৃত কাশ্মীরে ট্রফি পরিক্রমা করলে, দুই দেশের মধ্যে সমস্যা বাড়বে বুঝে পিসিবি-র পরিকল্পনা বাতিলের সিদ্ধান্ত আইসিসি-র।
এদিকে চলতি চাপানউতোরের মাঝে আইসিসি-র বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন নাজাম শেঠি। প্রাক্তন পিসিবি প্রধান অভিযোগ করেন, আইসিসি বরাবরই ভারতের পক্ষ নেয়। বিসিসিআইয়ের দাবিকে অগ্রাধিকার দেয়। আইসিসি-কে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লাভ নেই।
এক সাক্ষাৎকারে নাজাম বলেছেন, ‘একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই, আইসিসি সবসময় ভারতের পক্ষই নেবে। এটাই বাস্তব। কিন্তু শেষপর্যন্ত টুর্নামেন্ট যদি অন্যত্র সরানো হয় এবং পাকিস্তান টুর্নামেন্ট বয়কট করলে দায়িত্ব কিন্তু আইসিসি-র। দায় এড়াতে পারবে না ভারত-পাকিস্তানও।’
আইসিসি লভ্যাংশ বণ্টন নীতির প্রসঙ্গ টেনে নাজামের আরও দাবি, ‘লভ্যাংশের একটা বড় অংশ ভারত পায়। পাকিস্তানও পায়। কোনও কারণে আইসিসি এই অনুদান আটকে দেয়, ভারতের কিছু হবে না। ওরা অত্যন্ত ধনী বোর্ড। মার খাবে পাকিস্তান। আর্থিক ক্ষতিতে ক্রিকেট উন্নত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
মাথা ঠান্ডা রেখে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রয়োজনে হাইব্রিড মডেলে রাজি হতে বলছেন নাজাম। প্রাক্তন পিসিবি প্রধানের যুক্তি, ‘দায়িত্বে থাকার সময় একই সমস্যায় পড়েছিলাম। সমাধানের রাস্তা খুঁজতে ভারতীয় মিডিয়াকে কাজে লাগায়। ওদের মাধ্যমেই হাইব্রিড মডেলের প্রস্তাব বিসিসিআইয়ের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলাম। শেষপর্যন্ত হাইব্রিড মডেলেই টুর্নামেন্ট হয়। বর্তমান কর্তারাও মাথা ঠান্ডা রেখে সমাধানের রাস্তা খুঁজুক।’
এদিকে, পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে না যাওয়ার কারণ লিখিতভাবে ভারতের থেকে জানতে চাইল আইসিসি। আনুষ্ঠানিকভাবে বিসিসিআইয়ের কাছে এই সিদ্ধান্তের লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছে। পাক মিডিয়া সূত্রের খবর, পিসিবি অপেক্ষা করছে ভারত কী কারণ দেখায়। তা হাতে আসার পর কারণের সপক্ষে প্রমাণের দাবিতে ভারতকে অস্বস্তিতে ফেলতে ফের কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়বেন মহসিন নকভির পাক বোর্ড।