নয়াদিল্লি: বাইশ গজে একদা দুজনের যুদ্ধ রং ছড়িয়েছে। সোনালি সেসব দিন আপাতত অতীত। কয়েক দশক পার, দুজনেই অবসরের গ্রহের বাসিন্দা। তবে যুদ্ধটা জারি। মাঠের বদলে মাঠের বাইরে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রতিটি ম্যাচ দুবাইয়ে খেলা নিয়ে ভারতকে একহাত নিয়েছেন অ্যান্ডি রবার্টস। অভিযোগ, ভারত দাদাগিরি চালাচ্ছে। আর তাতে সায় দিচ্ছে আইসিসি।
রবার্টসের দাবি, টুর্নামেন্টে এক মাঠ, এক শহরে সব খেলার অনুমতি দিয়ে ভারতকে সুবিধা করে দিয়েছে আইসিসি। বাকি দলগুলি এক শহর থেকে আরেক শহর, এক দেশ থেকে আরেক দেশ করেছে, অথচ রোহিত-বিরাটদের দুবাইয়ের বাইরে যেতেই হয়নি। যা অভিপ্রেত ছিল না। কিংবদন্তি ক্যারিবিয়ান পেসার বলেছেন, ‘ভারতকে না বলা অভ্যাস করতে হবে আইসিসির। যা চাইবে তাই পাবে, এটা ঠিক নয়। আমার তো মনে হয় ভারত চাইলে নো, ওয়াইডও তুলে দেবে আইসিসি!’
প্রাক্তন পেসারের আরও দাবি, গত টি২০ বিশ্বকাপেও নাকি অনৈতিক সুবিধা পেয়েছিল ভারতীয় দল। রবার্টস বলেছেন, ‘গায়নাতে সেমিফাইনাল খেলবে, তা আগেই জেনে গিয়েছিল ভারত! চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তো যাতায়াতের কোনও ধকলও ছিল না। কীভাবে একটা দলকে এই সুবিধার অনুমতি দেওয়া সম্ভব? এটা ক্রিকেট নয়। আনফেয়ার। জানি ক্রিকেট রেভিনিউর মূল উৎস ভারত। কিন্তু মনে রাখা উচিত ক্রিকেট একটা দেশকে নিয়ে নয়। মনে হচ্ছিল, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এক দেশের টুর্নামেন্ট।’
রবার্টসের অভিযোগকে সুনীল গাভাসকার চেনা মেজাজেই মাঠের বাইরে পাঠালেন। নিন্দুকদের মনে করিয়ে দিলেন, সাদা বলের ফরম্যাটে ভারত বাকিদের থেকে কয়েক মাইল এগিয়ে। আর যে সুবিধার কথা বলা হচ্ছে, আদপে তা িভত্তিহীন। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে নয়, প্র্যাকটিস করেছে সেখানকার আইসিসি-র অ্যাকাডেমির মাঠে। আর ঘরে-বাইরে ভারতের যা ধারাবাহিকতা, তাতে সাদা বলে বিশ্বের সেরা দল। সমালোচনা না করে সেটা মেনে নেওয়া উচিত।
গাভাসকার বলেছেন, ‘টানা তিনটি আইসিসি ট্রফির ফাইনাল। ওডিআই বিশ্বকাপ, টি২০ বিশ্বকাপের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-নিঃসন্দেহে সাদা বলের ফরম্যাটে এই ব্রহ্মাণ্ডের সেরা ক্রিকেট দল। যদি তা স্বীকার না করে নিন্দুকরা সমালোচনার রাস্তা ঠিক খুঁজেই নেয়। তাদের বোঝা উচিত, হোম অ্যাডভান্টেজ না পেয়েও এই কৃতিত্ব দেখানো ভারতের ক্রিকেট শক্তির প্রতিফলন।’
এদিকে, বীরেন্দ্র শেহবাগ অধিনায়ক রোহিত শর্মাতে মজে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যেভাবে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছে, বোলারদের সামলেছে, মহেন্দ্র সিং ধোনির ছায়া দেখছেন। বলেছেন, ‘অধিনায়ক রোহিতকে সেভাবে গুরুত্ব দিইনি আমরা। অথচ, এমএস ধোনির পর একাধিক আইসিসি ট্রফি জয়ী ভারতীয় অধিনায়ক ও। যেভাবে বোলারদের ব্যবহার করেছে, প্রতিটি পদক্ষেপে স্বচ্ছতা রেখেছে, তা প্রশংসনীয়। সেটা অর্শদীপ সিংকে বসিয়ে হর্ষিত রানাকে খেলানো হোক বা বরুণ চক্রবর্তীকে প্রথম একাদশে রাখা। নিজেকে নয়, দল, সতীর্থদের অগ্রাধিকার দিয়েছে। ভরসা জুগিয়েছে, যাতে কেউ অনিশ্চয়তায় না ভোগে। একজন অধিনায়ক, লিডারের থেকে এটাই প্রত্যাশিত।’