কোচবিহার: কোচবিহারকে পাইলট জেলা করে হেপাটাইটিস-বি নিয়ন্ত্রণে এগোচ্ছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের চারটি জেলাকে পাইলট হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে উত্তরবঙ্গের একমাত্র কোচবিহার জেলা রয়েছে। জেলার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে যে কোনও রোগের রক্ত পরীক্ষার জন্য গেলেই সেখানে হেপাটাইটিস-বি’র পরীক্ষা করে নেওয়া হচ্ছে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুকান্ত বিশ্বাস বলেছেন, ‘রোগীকে চিহ্নিত করে রোগ নিয়ন্ত্রণ করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। সেজন্য পরীক্ষার সংখ্যা অনেক বাড়ানো হয়েছে। সাধারণ মানুষকে এই রোগ নিয়ে সচেতনও করা হচ্ছে।’
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হেপাটাইটিস-বি রোগ হলে প্রথম অবস্থায় তা খুব একটা বোঝা যায় না। পরবর্তীতে যকৃৎ সম্পর্কিত সমস্যা, ক্লান্তি, পেটব্যথা, জন্ডিস নানা উপসর্গ দেখা যেতে পারে। মায়ের এই রোগ থাকলে শিশুরও এই রোগ হতে পারে। প্রথম অবস্থায় এই রোগ চিহ্নিতকরণের উপরেই জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্য দপ্তর। ২০২২-’২৩ সালে জেলায় মোট ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৭০৪ জনের হেপাটাইসিস-বি রোগের পরীক্ষা করা হয়েছিল। তার মধ্যে ০.৫৬ শতাংশ রোগীর পজিটিভ ধরা পড়ে। ২০২৩-’২৪ সালে ১ লক্ষ ২৩ হাজার ৮৫৬ জনের পরীক্ষা করা হলে দেখা যায় তার মধ্যে ০.৪১ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। অসংরক্ষিত যৌন মিলন, সেলুনে অন্যের ব্যবহার করা ব্লেড, অন্যের ব্যবহৃত সুচ দিয়ে ট্যাটু করার কারণে এই রোগ ছড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়ার কথা বলেছেন চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, কোচবিহারকে পাইলট প্রোজেক্ট করায় এখানে কীভাবে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে তা রাজ্য স্তরে তুলে ধরা হবে। পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য যৌনপল্লি, সংশোধনাগারগুলিতে মাঝেমধ্যেই হেপাটাইসিস-বি’র পরীক্ষা করা হয়। প্রাথমিকভাবে পজিটিভ ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট রোগীর আরও কিছু পরীক্ষা করা হয়। এছাড়াও হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে রোগীদের নিয়মিত পরীক্ষা চলে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। রোগ চিহ্নিত হলে নিয়ম মেনে চিকিৎসা করা হয়।