সোনাপুর: ঢাক ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করা হয়েছিল নির্মল গ্রাম পঞ্চায়েতের। সেটা বছর ছয়েক আগের কথা। গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরলে হয়তো ওই ঘোষণার আর ব্যানার পোস্টার কিছু দেখা যাবে না। পোস্টার যেভাবে হারিয়েছে তেমনভাবেই হারিয়েছে স্বচ্ছতার ছবিটাও। অস্বচ্ছতার নমুনা খুঁজতে বেশি দূরে যেতে হবে না, গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যালয়ের পাশেই মিলবে আবর্জনার স্তূপের। কথা হচ্ছে, আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের মথুরা গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে। গ্রাম কার্যালয়ের পাশেই জমে থাকা আবর্জনা স্থানীয়দের পাশাপাশি এলাকার ব্যবসায়ীদেরও মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে।
দীর্ঘদিন থেকে মথুরায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির আলোচনা করা হলেও সেটা হয়ে ওঠেনি। অন্যদিকে, দিনে দিনে ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির প্রয়োজনীয়তা যেন বেড়েই চলছে। গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ বলছে চা বাগান এলাকায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড করা একটু মুশকিলও। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অশোক ওরাওঁয়ের এবিষয়ে বক্তব্য, ‘মথুরার বেশিরভাগই চা বাগান এলাকা। এই জায়গায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড করা যায় কি না। ভেবে দেখা হবে।’
মথুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যালয় রয়েছে মথুরা হাটখোলায়। এই জায়গাতেই যেমন স্থায়ী বাজার রয়েছে। তেমনই ব্লকের অন্যতম বড় হাটও বসে মথুরায়। সপ্তাহের প্রতি সোমবার এবং বৃহস্পতিবার হাট বসে। ব্লকের বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি আলিপুরদুয়ার শহরের বিভিন্ন দোকান আসে এখানে। এই হাটের এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়নে অনেকটাই অবদান রয়েছে। অন্যদিকে, হাটের আবর্জনাই মাথা ব্যথার কারণ।
মথুরা হাটের যে পাশে মাংসর বাজার বসে সেই জায়গাতেই রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। এই বাজারে পোলট্রি, পাঠা, শুকোরের মাংস পাওয়া যায়। মাংসর বাজারের আবর্জনা ওই জায়গায় জমে থাকে। আবার ওই জায়গা থেকে কিছু দূরে বাজারের শৌচাগারের পাশেও আরেকটি আবর্জনার স্তূপ রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে। ওই আবর্জনার পাশেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাজার করতে হয়। এবিষয়ে এদিন হাটের এক ব্যবসায়ী সুজন বর্মন বলেন, ‘মথুরা হাটে ওই অবর্জনার পাশেই দোকান বসে। মানুষ এসে কেনাকাটাও করে। এটা দীর্ঘদিনের রুটিন হয়ে গিয়েছে। এটার সমাধান হবে কি না জানি না।’ বাজারের নর্দমাগুলোও ঠিক করে পরিষ্কার করা হয় না বলেও অভিযোগ শোনা গেল এলাকায়। ব্যবসায়ীদের যে এই আবর্জনার জন্য সমস্যা হচ্ছে। সেটা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চিঠি দেওয়া হলেও কাজ হয়নি বলেই বক্তব্য মথুরার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কিশোর নস্করের। এবিষয়ে প্রশ্ন করা হলে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান জানান, শীঘ্রই আবর্জনা পরিষ্কার করা হবে। তবে এই আশ্বাস কতটা কাজে দেয়, নির্মল বাংলা গ্রামের শিরোপা কি শুধু কাগজে কলমেই থেকে যাবে? সেই প্রশ্ন উঠছে আবর্জনার সমস্যায় ভুক্তভোগী মথুরার সাধারণ মানুষের মধ্যেই।