কলম্বো: ১৫ বলে মাত্র ১ রান প্রয়োজন। সহজ হার্ডলে আটকে যাওয়া মানতে পারছেন না রোহিত শর্মা। সাফ কথা, রানটা করা উচিত ছিল। শেষ দুই বলে জোড়া উইকেট নিয়ে হারা ম্যাচ টাই করে অপরদিকে ফুরফুরে মেজাজে শ্রীলঙ্কা শিবির।
রবিবার যে আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফের মেন ইন ব্লু-কে কঠিন লড়াইয়ের সামনে দাঁড় করিয়ে দিতে চান চরিথ আশালঙ্কা। ভারতীয় ব্যাটারদের মূল পরীক্ষা অবশ্য টার্নিং পিচে শ্রীলঙ্কান স্পিন ব্রিগেডকে সামলানো।
চরিথ আসালাঙ্কা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ডি সিলভা, দুনিথ ওয়েল্লালাগে-স্পিনার ত্রয়ীর দাপটে রোহিতের দারুণ শুরুটুকু সরিয়ে রাখলে বাকিদের ব্যাটিংয়ে রীতিমতো ঠকঠকানি। বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুলরা জমে গিয়েও যা সামলাতে হিমসিম খেয়েছে।
আগামীকাল দৃশ্যটা বদলানোই গৌতম গম্ভীরদের পয়লা নম্বর টার্গেট। অধিনায়ক রোহিতও বলে দেন, ব্যাটিং-ভুলে ম্যাচ হাতছাড়া। বড় টার্গেট ছিল না। দরকার ছিল ভালো ব্যাটিংয়ের। যা হয়নি। ভালো শুরু করেও পরপর উইকেট হারিয়ে পরিস্থিতি কঠিন করে ফেলেন তাঁরা।
রোহিত যেখানে হতাশ, সেখানে টাই ম্যাচে আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফিরেছে আসালাঙ্কারা। ব্যাটিং ও বোলিং-ধাক্কা সামলে যেভাবে দল ঘুরে দাঁড়িয়েছেন উচ্ছ্বসিত কোচ সনৎ জয়সূর্যও।
শুভমান গিলকে দিয়ে বোলিং নিয়েও আঙুল উঠছে। শুভমানের ওভারে ১৪ রান পাওয়ার পরই মোমেন্টাম বদল চাপে থাকা শ্রীলঙ্কা ইনিংসে। ওয়েল্লালাগের ৬৭ রানের ইনিংসের হাত ধরে শেষপর্যন্ত ২৩০-এ পৌঁছে যাওয়া। অথচ, একসময় দুইশো পেরোনোই অসম্ভব দেখাচ্ছিল।
মহম্মদ সিরাজদের বোলিং কোচ সাইরাজ বাহুতুলের অবশ্য উলটো যুক্তি। বলেন, ‘দলের ভারসাম্য বাড়াতে এরকম পদক্ষেপ আরও বেশি করে নেওয়া হবে। টপ অর্ডারের অনেককেই বোলিংয়ে দেখা যাবে। শুভমানকে দিয়ে বোলিং করানো সেই পরিকল্পনার ফসল।’
টি২০ সিরিজে রিঙ্কু সিং, সূর্যকুমার যাদবের বোলিং চমকে দিয়েছিল। যেদিকে ইঙ্গিত করে বাহুতুলে বলেন, ‘টি২০ সিরিজে রিঙ্কু, সূর্য বল হাতে অবদান রেখেছে। এখানে তাই শুভমানকে ব্যবহার। ভবিষ্যতে অলরাউন্ড দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। টপ অর্ডারে ২-১ জন বোলিং করলে দল উপকৃত হবে। প্রতিপক্ষকেও চমকে দেওয়া যাবে।’
রোহিতদের যে ছক ভেঙে শুক্রবার নায়ক ওয়েল্লালাগে। ৬৭ রানের পর জোড়া উইকেট। নিজের ব্যাটিংয়ের জন্য দুনিথ কৃতিত্ব দিচ্ছেন পাথুম নিসাঙ্কাকে। বলেছেন, ‘পাথুমের ইনিংস, ব্যাটিং মাথার মধ্যে গেঁথে গিয়েছিল। ব্যাটিং করার সময় সেভাবেই পরিকল্পনা করেছি। চেষ্টা করেছি বোলারদের ওপর চাপ তৈরি করে পার্টনারশিপ গড়তে।’
শ্রীলঙ্কান স্পিন-ত্রয়ীর পাশাপাশি নিসাঙ্কা, দুনিথের ব্যাট হাতে লড়াইকে গুরুত্ব না দিয়ে উপায় নেই। প্রথম ম্যাচের ধাক্কা কাটিয়ে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আগামীকাল শততম ওডিআই জয়ের লক্ষ্যে ফের নামবে রোহিতের ভারত (১৬৯টি ম্যাচে ৯৯টিতে জিতেছে)। কোনও এক দলের বিরুদ্ধে যে নজির বিশ্ব ক্রিকেটে নেই।
স্ট্র্যাটেজির পাশাপাশি প্রথম এগারোয় পরিবর্তনের ভাবনাও থাকছে। গুরুত্ব পাচ্ছেন ঋষভ পন্থ, রিয়ান পরাগরা। টি২০-তে রিয়ানের স্পিন কাজে এসেছিল। এখানকার টার্নিং পিচে রিয়ানের স্পিন ফের কার্যকর হতে পারে। ব্যাটিংয়ে ঝাঁঝ বাড়াতে অপরদিকে ঋষভ।
কিন্তু প্রশ্ন কার জায়গায়? থাকছে প্রথম ম্যাচের এগারোকে আরও সুযোগ দেওয়ার যুক্তিও। ভুল শুধরাতে ভারত কোন পথে হাঁটবে? সেঞ্চুরি জয়ের লক্ষ্যপূরণ, নাকি ভুলের ভুলভুলাইয়াতেই ফের আটকে যাবে? উত্তরের জন্য আগামীকাল পর্যন্ত অপেক্ষা।