উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ গোলশূন্য শেষ হল ভারত-বাংলাদেশের ফুটবল ম্যাচ। এএফসি এশিয়ান কাপের ম্যাচে শিলংয়ের জওহরলাল স্টেডিয়ামে অংশ নিয়েছিল ভারত ও বাংলাদেশ। আক্রমণ প্রতিআক্রমণে জমজমাট ছিল এদিনের ম্যাচটি। দুই পক্ষই এদিন একাধিক সহজ সুযোগ নষ্ট করে। দীর্ঘ ২৬ বছর পর ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ ড্র করল বাংলাদেশ।
শেষবার ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ফুটবল ম্যাচে ড্র হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। এরপর একাধিকবার দুই দেশ মুখোমুখি হলেও ভারতকে হারাতে বা ড্র করতে পারেনি বাংলাদেশ। এবার জয়ের বিষয়ে মরিয়া ছিল টাইগাররা। দলে রাখা হয়েছিল ইংলিশ ফুটবল প্রিমিয়র লিগে নিয়মিত খেলা প্রবাসী ফুটবলার লেস্টার সিটির হামজা চৌধুরীকে। এদিন প্রথমার্ধে কিছুটা নজর কাড়লেও দ্বিতীয়ার্ধে সেভাবে খুঁজে পাওয়া যায়নি হামজাকে। ভারতের সুনীল ছেত্রীকেও সেভাবে খুঁজে পাওয়া যায়নি এদিনের ম্যাচে।
এদিন ম্যাচের প্রথম মিনিটেই বিশাল কাইথের ভুলে গোল করার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আক্রমণে উঠে আসে এবং বল কাইথের কাছে চলে যায়। তিনি ভুল করে বল বাংলাদেশের জনির পায়ে তুলে দেন। জনি গোল করতে ব্যর্থ হন। এর কিছুক্ষণ পরেই ফের বড় ভুল করলেন বিশাল কাইথ। ফের গোলের সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ. তবে শুভাশিস বোস গোল লাইন সেভ করে বাঁচিয়ে দেন ভারতকে।
৩১ মিনিটে বড় সুযোগ হাতছাড়া হয় ভারতের। শুভাশিস বোস বল বাম প্রান্ত দিয়ে লিস্টনের দিকে বাড়িয়ে দেন, এবং তিনি বলটি মাঝখানে পাঠান। উদান্তার চমৎকার হেড বাংলাদেশের গোলরক্ষক রক্ষা করেন। ফারুকের রিবাউন্ড শট মারেন। শটটি দুর্বল ছিল, ফলে মারমা সহজেই তা ধরে ফেলেন। মাঠের বাম দিক থেকে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যান লিস্টন কোলাসো। কিন্তু জালে জড়াতে ব্যর্থ হন সুনীলরা।
প্রথমার্ধের খেলা শেষ। ৪৫ মিনিটের পরে ম্যাচের ফল গোলশূন্য। তবে প্রথম মিনিটেই পিছিয়ে যেতে পারত ভারত। এরপরে অনেকবার আক্রমণ চালিয়েছিল বাংলাদেশে। এই সময়ে বিশালকে একাধিক ভুল করতে দেখা গিয়েছে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে ছন্দে ফেরে ভারত। লিস্টন, উদান্তারা প্রতিপক্ষের বক্সে আক্রমণের ঝড়় তোলেন, যা বাংলাদেশের রক্ষণের কাছে আটকে যায়। ম্যাচের ৬১ মিনিটের মাথায় গোলের সুযোগ পায় বাংলাদেশ। বিশাল কাইথ আবারও বল দেন বাংলাদেশ ফুটবলারের পায়ে। আর জনি বক্সে ঢুকে মাঝখানে পাস দেন। শুভাশিস গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিরোধ করে বল বিপদমুক্ত করেন।
ম্যাচের ৭৭ মিনিটের মাথায় ফারুখের জায়গায় মাঠে নামলেন ব্রিসন ফার্নান্ডেজ। ম্যাচের ৮৪ মিনিট পর্যন্ত মাঠে ছিলেন সুনীল ছেত্রী। মাঠ ছাড়ার আগে গোল করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক। গোলের সামনে একা দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। বল তাঁর কাছে আসলে সেটিকে জালে জড়াতে ব্যর্থ হন সুনীল। তিনি বক্সের মধ্যে একেবারেই অরক্ষিত ছিলেন। মাঠ থেকে বেরিয়ে গোল মিস করার জন্য হতাশ হয়ে যান ছেত্রী। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য শেষ হয় এদিনের ম্যাচ। ভারত এবং বাংলাদেশ ম্যাচের পরে রেগে লাল ভারতীয় দলের কোচ মানোলো মার্কুয়েজ। তিনি বলেন, একাধিক গোলের খেসারত দিতে হয়েছে দলকে। এদিনের ড্রয়ে আমি খুব হতাশ হয়েছি।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে এখন পর্যন্ত ২৯ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ। এর মধ্যে ভারত ১৪টি ম্যাচ জিতেছে, অন্যদিকে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ৪টি ম্যাচে। এখনও পর্যন্ত ১১টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। শেষ ড্র হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। বাংলাদেশের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স রয়েছে সুনীল ছেত্রীর। তিনি বিভিন্ন ম্যাচে মোট ৬টি গোল করেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে।