শিলিগুড়ি: উত্তরে বদলাচ্ছে রেল মানচিত্র। চিকেন নেকের সুরক্ষায় এবার চক্রব্যূহ তৈরি করতে চাইছে রেল। যে কারণে বাংলাদেশ (Bangladesh) তো বটেই, নেপালেও (Nepal) রেললাইন পাতবে ভারতীয় রেল (Indian Railways)। ফলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যোগাযোগ উন্নত তো হবেই, সেইসঙ্গে একাধিক রুটে যাত্রাপথ কমে যাবে অনেকটা।
আন্তর্জাতিক রেল সংযোগ তৈরি করতে ১৪টি নতুন রুটের সমীক্ষা হয়েছিল। সমীক্ষা রিপোর্ট সন্তোষজনক হওয়ায় প্রতিটি রুটের ক্ষেত্রেই অনুমোদন দিয়েছে রেল বোর্ড। ফলে অদূরভবিষ্যতে উত্তরবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের মতো নেপালেও ট্রেনে চেপে যাওয়া যাবে। রেল সূত্রে খবর, দেশের পরিকাঠামো উন্নয়নে নজর রেখে ভারতকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ ও নেপাল। কিন্তু অধিকাংশে ক্ষেত্রে যেহেতু নতুন লাইন পাতা হবে এবং তার মধ্যে সিংহভাগ এই রাজ্যে, ফলে জমিজট দেখা দিতে পারে বলে রেলকর্তাদের একাংশের আশঙ্কা রয়েছে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলছেন, ‘রেল বোর্ডের অনুমোদন মেলায় অর্থবরাদ্দের পাশাপাশি কাজ শুরু হতে বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না। প্রকল্পগুলি রূপায়িত হওয়ার পর উত্তরবঙ্গের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পরিবহণ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে। এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও শক্তিশালী হবে।’
নেপালের পাশাপাশি বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে চিন ভারতের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে। এবার রেল পরিকাঠামোর উন্নয়ন ঘটিয়ে বাংলাদেশ এবং নেপালের মাটি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে উদ্যোগ নিল ভারতও। যে কারণে আন্তর্জাতিক রেল সংযোগস্থাপনের ক্ষেত্রে ১৪টি রুট সমীক্ষায় রিপোর্টে চূড়ান্ত সিলমোহর দিল রেল বোর্ড। ইতিমধ্যে সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত ট্রেন নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। নাথু লা পর্যন্ত ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ১,২৭৫.৫ কিলোমিটার রেললাইনের যে অনুমোদন দিয়েছে রেল বোর্ড, তার মধ্যে বাংলাদেশের ৮৬১ এবং নেপালের ২৯২.৫ কিলোমিটার রয়েছে। বাকিটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের। রেল সূত্রে খবর, অধিকাংশ রুটে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলকে।
বাংলাদেশ পথে বালুরঘাট-হিলি-পার্বতীপুর-কোনিয়া-লালমণিরহাট-মোগলহাট-গিতালদহ সেকশনে ৩০ কিলোমিটার রেললাইন পাতা হবে। তার মধ্যে ১৪ কিলোমিটার নতুন রেললাইন। বাকিটা গেজ পরিবর্তন করা হবে। রুটটি চালু হলে বালুরঘাট থেকে গিতালদহের দূরত্ব প্রায় অর্ধেক হয়ে যাবে।
নতুন পরিকল্পনায় রয়েছে বালুরঘাট-গিতালদহ-বামনহাট-সোনাহাট-গোলকগঞ্জ-ধুবড়ি রেললাইন। এই সেকশনে ৫৬ কিলামিটারের মধ্যে ৩৮ কিলোমিটারে নতুন রেললাইন পাততে হবে। বালুরঘাট-হিলি-গাইবান্ধা-মহেন্দ্রগঞ্জ-তুরা-মেন্দিপাথার সেকশনে ২৫০ কিলোমিটার। এই রুটটির পুরোটাই নতুন। ফলে বালুরঘাট থেকে মেঘালয়ের একেবারে শেষ সীমানায় পৌঁছে যাওয়া যাবে অনায়াসে।
মঙ্গুরগজান-পিরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও-পাঁচগড়-হলদিবাড়ি পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার নতুন পথের ভাবনা রয়েছে রেলের। চালখোলা-পিরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও-পাঁচগড়-হলদিবাড়ি সেকশনের ৮০ কিলোমিটারও নতুন রুট। রাধিকাপুর-বিরল-পার্বতীপুর-কোনিয়া-গিতালদহ সেকশনের ৩২ কিলোমিটারের মধ্যে ১৪ কিলোমিটার নতুন এবং বাকি রুটে গেজ পরিবর্তন করা হবে। বেলোনিয়া-ফেনি-চট্টগ্রাম পথের দৈর্ঘ্য ১৩১ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩৮ কিলোমিটার নতুন রেলপথ বসবে এবং গেজ পরিবর্তন হবে ৯৩ কিলোমিটারে। ১২০ কিলোমিটার গেজ পরিবর্তন হচ্ছে পেট্রাপোল-বেনাপোল-নবহরণ-যশোর-রূপদিয়া-পদ্মবিল-লোহাগোরা-কাশীয়ানি-শিবচর-মাবা-নিমতলা-গেন্দারিয়া-ঢাকা-টঙ্গি-ভৈরব বাজার-আখাউরা-আগরতলার।
নেপালে নজর রেখে নতুন রেললাইন পেতে রুট তৈরি করা হচ্ছে বিরাটনগর থেকে নিউ মাল জংশন পর্যন্ত, যার দৈর্ঘ্য ১৯০ কিলোমিটার। গলগলিয়া-ভদ্রপুর-কাজলি বাজার পর্যন্ত আরও একটি নতুন রুট তৈরি হচ্ছে। রেলপথটির দৈর্ঘ্য ১২.৫ কিলোমিটার। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নজর রেখে রেল পরিকাঠামোরও উন্নয়ন ঘটছে। নতুন রুট তৈরি হচ্ছে ফরবেশগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর (১৭.৬ কিলোমিটার), ঠাকুরগঞ্জ-চটেরহাট (২৪.৪ কিলোমিটার) এবং কুমেদপুর ও আমবাড়ি-ফালাকাটার মধ্যে। অর্থাৎ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দখল হওয়া জায়গা উদ্ধার করতে হবে রেলকে। কিছু ক্ষেত্রে রাজ্যের থেকে জমিও নিতে হবে। ফলে প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন নিয়ে কিছুটা হলেও সংশয় থেকে যাচ্ছে। উচ্চপদস্থ এক রেলকর্তার বক্তব্য, ‘প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হলে প্রচুর এলাকার মানুষ উপকৃত হবেন। ফলে জমির সমস্যা হওয়ার কথা নয়। দেখা যাক কী হয়।’
বালুরঘাট: ঘটা করে চালুর ১২ দিনের মধ্যে ফের বিকল হয়ে পড়ল বালুরঘাট (Balurghat) পুরসভার খিদিরপুর…
সৌভিক সেন ও অনিমেষ দত্ত, শিলিগুড়ি: ছেলে লেখাপড়ায় ভালো। পরিবারে অনেকেই চিকিৎসক। ছেলে মহম্মদ সরফরাজও…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: টি২০ বিশ্বকাপে আফগান রূপকথা। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে বাংলাদেশকে ডাকওয়ার্থ লুইস মেথডে ৮…
শিলিগুড়ি: নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন এলাকায়। অভিযোগ, ১৪ বছরের…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ফুটো হয়ে গিয়েছে অযোধ্যায় রাম মন্দিরের (Ram Mandir) ছাদ। আর সেই…
This website uses cookies.