লন্ডন: অবৈধভাবে বসবাসকারী ভারতীয়দের ফেরত পাঠাতে শুরু করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা (US)। ঠিক একই কায়দায় ব্রিটেনও (UK) এবার সেই পথেই হাঁটছে। ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির আদলে ব্রিটেনের লেবার পার্টির সরকার দেশজুড়ে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে। বিশেষ করে ভারতীয় রেস্তোরাঁ, নেইল বার, ছোট দোকান ও গাড়ি পরিষ্কারের ব্যবসাগুলির ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। অভিযান চলাকালীন বহুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর।
ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক প্রকাশিত একটি ভিডিওতে অবৈধ অভিবাসীদের (Illegal migrants) বিমানে চাপিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করার দৃশ্য ধরা পড়েছে। গত বছরের জুলাই মাসে লেবার পার্টি সরকার দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে প্রায় ১৯ হাজার অবৈধ অভিবাসী, ব্যর্থ আশ্রয়প্রত্যাশী ও ভিনদেশি অপরাধীদের বহিষ্কার করা হয়েছে বলে দাবি কিয়ের স্টারমার প্রশাসনের।
স্বরাষ্ট্রসচিব ইভেট কুপার জানিয়েছেন, তাঁর দপ্তরের অভিবাসন দমন দল (ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্ট) জানুয়ারি মাসে রেকর্ড সংখ্যক অভিযান চালিয়েছে। গত জানুয়ারিতে ৮২৮টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ৬০৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যা গত জানুয়ারির তুলনায় ৭৩ শতাংশ বেশি। হাম্বারসাইডের একটি ভারতীয় রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে গ্রেপ্তার ও ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র দফতরের আধিকারিক এডি মন্টগোমারি জানিয়েছেন, গত জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত গ্রেপ্তারি ৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে মোট জরিমানা করা হয়েছে ১,০৯০ জনকে। অবৈধ অভিবাসী কর্মী রাখার দায়ে নিয়োগকর্তাদের কর্মীপিছু ৬০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা দিতে হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হলেও রেস্তোরাঁ, টেকঅ্যাওয়ে ও ক্যাফেতে অভিযান সবচেয়ে বেশি জোরদার করা হয়েছে। কুপারের কথায়, ‘অভিবাসন আইন অবশ্যই মেনে চলতে হবে সব বাসিন্দাকে। এই আইন আমরা কঠোরভাবেই কার্যকর করব। দীর্ঘদিন ধরে কিছু নিয়োগকারী সংস্থা অবৈধ অভিবাসীদের কাজে লাগিয়ে সুবিধা নিচ্ছেন। তাঁদের অসহযোগিতার জন্যই অবৈধ বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এবার আর সেটা হবে না।’ কুপারের আরও বক্তব্য, এই পরিস্থিতি মানুষকে বিপজ্জনকভাবে নৌকায় চ্যানেল পেরিয়ে ব্রিটেনে আসতে উৎসাহিত করেছে। এই শোষণমূলক ব্যবস্থা চলতে দেওয়া যায় না।
বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টি অবশ্য নতুন অভিবাসন বিলকে ‘দুর্বল আইন’ বলে সমালোচনা করেছে এবং আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। ছায়া স্বরাষ্ট্রসচিব ক্রিস ফিলিপ বলেন, ‘আমাদের দেশটা হোটেল নয়, এটা আমাদের বাড়ি। তাই অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে। ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে অবৈধ অভিবাসীদের আড়াল করা চলবে না।’