শিলিগুড়ি: প্রায় প্রতিদিনই শিলিগুড়ি পুরনিগমের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি জায়গায় অবৈধ নির্মাণ ভাঙা হচ্ছে। সরানো হচ্ছে ফুটপাথ দখল করে থাকা ব্যবসায়ীদের। কিন্তু উলটো ছবি দেখা যাচ্ছে শহরতলির ঠাকুরনগর, জলেশ্বরী বাজার, অম্বিকানগর, ফুলবাড়ি সহ ফাড়াবাড়ি, মাঝাবাড়ি, হাতিয়াডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকায়।
অভিযোগ উঠেছে, এসব এলাকায় ব্যবসায়ীদের অনেকেই ফুটপাথ দখল করে বহালতবিয়তে ব্যবসা চালাচ্ছেন। কোথাও ফুটপাথের ওপর রাখা হয়েছে দোকানের সামগ্রী। আবার কোথাও গোটা দোকানই বসেছে ফুটপাথের ওপর। আসবাবপত্র, সবজি, মুদিখানা হোক বা বিভিন্ন ধরনের খাবার, সবই মিলছে সেখানে। ফুলবাড়ির বাসিন্দা তন্ময় সরকারের আক্ষেপ, ‘শহরতলিতে ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’ বুধবার সকাল ৮টা নাগাদ দেওনিয়াপাড়া হয়ে ক্যানাল রোডের দিকে যাওয়ার সময় ভালোবাসা মোড়ে আটকে যায় একটি স্কুলবাস। চালকের বক্তব্য, ‘এভাবে রাস্তায় বাজার বসলে যানজট তো হবেই।’
মেয়েকে টিউশনিতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ঠাকুরনগর রেলগেট পেরিয়ে ভিআইপি মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন ঝর্ণা মণ্ডল। ফুটপাথ দিয়ে চলতে না পেরে মেয়েকে নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন তিনি। ঠিক সেই সময় পাশ দিয়ে দুরন্তগতিতে চলে যায় একটি বাইক। ভয়ার্ত চোখে ঝর্ণা বলেন, ‘ফুটপাথ দিয়ে একটুও হাঁটার উপায় নেই। এখনই তো দুর্ঘটনা ঘটে যেত।’
আর এখানেই অনেকের প্রশ্ন, শহরে অভিযান চালানো হলেও গ্রামীণ এলাকায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন? এবিষয়ে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মনের মন্তব্য, ‘সাধ্যমতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। কেউ অভিযোগ জানালে পদক্ষেপ করা হবে।’ আপনাদের কাছে কি কোনও অভিযোগ নেই? সভাধিপতির জবাব, ‘না, নির্দিষ্ট অভিযোগ নেই।’
জবরদখল উচ্ছেদে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ফুলবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রফিকুল ইসলামের কথায়, ‘গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা খুবই সীমিত। চাইলেই পথে নেমে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। এতে এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে।’ প্রায় একই ধরনের বক্তব্য আরও কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, এক্ষেত্রে তারা প্রশাসনের সাহায্য কেন নিচ্ছে না?