রায়গঞ্জ: চূড়ান্ত অমানবিকতার নজির রায়গঞ্জে। ভাড়াটিয়ার মৃতদেহ বাড়িতে ঢুকতে দিল না মালিক। হাজার অনুনয়েও কাজ না হওয়ায় শেষপর্যন্ত বাড়ির গেট থেকে মৃতদেহ ঘুরিয়ে সৎকারের জন্য বন্দর শ্মশানে নিয়ে গেলেন পরিবারের সদস্যরা।
মৃত ওই টোটো চালকের নাম প্রহ্লাদ কুণ্ডু(৫২)। তিনি রায়গঞ্জ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের উকিলপাড়ায় জয়ন্ত বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তাঁর বড় মেয়ে রায়গঞ্জ গার্লস স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণিতে এবং ছোট ছেলে রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। টোটো চালিয়ে কোনওরকমে সংসার চলত তাঁর। কয়েকদিন আগে প্রহ্লাদবাবু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত বুধবার বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় আত্মীয়-পরিজনরা তাঁর মৃতদেহ ভাড়াবাড়ির গেটে নিয়ে আসতেই বাড়ির মালিক ও তাঁর ছেলে বাড়িতে ঢোকাতে বাধা দেন বলে অভিযোগ। অনেক আবেদন-নিবেদন করেও রাজি হননি তাঁরা। শেষ পর্যন্ত কাউন্সিলারের কথায় রাজি হলেও বাড়ির মালিকের অনিচ্ছার বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে মৃতের স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে শ্মশানে গিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। অবশেষে বাড়ির গেট থেকেই দেহ সৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। মৃতের স্ত্রী সন্ধ্যা কুন্ডু জানান, ওই বাড়িতে কালী মন্দির থাকায় স্বামীর দেহ নিয়ে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এমনকী শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করতেও নিষেধ করা হয়েছে। বাড়ি থেকে উঠে যেতে বলা হয়েছে তাঁদের। জানা গিয়েছে, স্থানীয় কাউন্সিলার এসে বাড়ির মালিককে অনুরোধ করার পর শ্রাদ্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এদিকে অমানবিক এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কাউন্সিলার অনিরুদ্ধ সাহা বলেন, ‘সভ্য সমাজে এমন ঘটনা দেখে সত্যি তাজ্জ্বব হয়ে গিয়েছি। মানুষ যে এতটা অমানবিক হতে পারে ধারনা ছিল না।’ পুরসভার চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাস জানান, পরিবারটির সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না। বাড়ির মালিক শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করতে না দিলে বীরনগরে তাঁর বাড়ির পাশে মহামায়া মন্দির প্রাঙ্গণে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন : সোনার দোকানে চুরি, চাঞ্চল্য বুনিয়াদপুরে