উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: রবিবার পাহাড়ে ধাক্কা লেগে চপার ভেঙে মৃত্যু হয়েছে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির (Ebrahim Raisi)। তবে চপার দুর্ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই দেখা গেল অন্য এক দৃশ্য। একদিকে অনেকে রাইসির জীবনরক্ষার জন্য প্রার্থনা করছিলেন, তখন অনেক ইরানিরা এই দুর্ঘটনায় নিজেদের আনন্দ উদযাপন করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরা এই দুর্ঘটনাকে নিয়ে মিম শেয়ার করেছেন। এমনকি আতশবাজিও ফাটিয়েছেন খুশিতে। সেইসব ভিডিও বর্তমানে ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social media)।
রাইসি ইরানের একজন ধর্মীয়, কট্টরপন্থী নেতা ছিলেন। ইরানে বাকস্বাধীনতাকে চূর্ণ করা এবং মহিলাদের জন্য কঠোর ‘হিজাব ও সতীত্ব আইন’ প্রয়োগ (Hijab and chastity law) করার মতো পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তিনি। এই কঠোর ইসলামী আইন প্রয়োগের পর ২০২২ সালে মাহসা আমিনির হেপাজতে থাকাকালীন মৃত্যু হওয়ার পরই কট্টরপন্থী শাসনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিবাদের সূত্রপাত হয়েছিল। হিজাব না পরার কারণে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মাহসা। শুধু তাই নয়, ১৯৮৮ সালে ইরানের রাজনৈতিক বন্দিদের গণফাঁসির পেছনে রাইসির ভূমিকা ছিল। এর জন্য তিনি ‘তেহরানের কসাই’ হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেন।
একসময়ের আধুনিক শিয়া মুসলিম দেশ (Shia Muslim country) হিসেবে পরিচিত হলেও ১৯৭৯ সালে নির্বাচনের পর দেশের সরকারের অভিমুখ চরম কট্টরপন্থার দিকে ঘুরে যায়। প্রতিহিংসাপরায়ণ ইরানি সরকার লক্ষ লক্ষ ইরানিকে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করে। তাই ইরানের বাইরেও বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। রাইসির চপার দুর্ঘটনার খবরে লন্ডনের ইরানি দূতাবাসের বাইরে বেশ কয়েকজনকে নাচতে দেখা গিয়েছে। এক নারী অধিকার কর্মী চপার দুর্ঘটনার দিনটিকে ‘বিশ্ব হেলিকপ্টার দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে বলেছেন, ‘এটি ইতিহাসের একমাত্র দুর্ঘটনা যেখানে কেউ বেঁচে আছে কিনা তা নিয়েই সকলে উদ্বিগ্ন ছিল।’