অমিতকুমার রায়, মানিকগঞ্জ: বনগ্রামে পরিস্রুত পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের (Drinking Water Problem)। জলে আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকায় সেটা পানের অযোগ্য। কোনও পাত্রে ওই জল রাখলে সেটি লালচে রংয়ের হয়ে যাচ্ছে। বারবার সমস্যা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হলে প্রায় নয় লক্ষ টাকা খরচ করে জলের ট্যাংক বসানো হয়। তবে শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রকল্প। নিম্নমানের জল পরিশোধন যন্ত্র (Water purifier) বসানোয় সেটি কাজেই আসছে না বলে অভিযোগ। ফলে সমস্যা সেই তিমিরেই। বাধ্য হয়ে দিনের পর দিন আয়রনযুক্ত জল পান করায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা নিকাশ রায়ের কথায়, ‘গ্রাম পঞ্চায়েতের অপরিকল্পিত ও নিম্নমানের কাজের মাশুল গুনতে হচ্ছে আমাদের। জলে এতটাই বেশি আয়রন যে, ট্যাপকলের জায়গা ও জলের ট্যাংক লালচে হয়ে যাচ্ছে।’ এ ব্যাপারে দক্ষিণ বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অন্নকান্ত দাসকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়ারকে এলাকায় পাঠানো হবে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
পরিস্রুত পানীয় জলের জন্য হাহাকার করছেন দক্ষিণ বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বনগ্রামের বাসিন্দারা। তিন বছর আগে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে এলাকায় কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে চার হাজার লিটার জল ধারণক্ষমতাসম্পন্ন একটি জলের ট্যাংক বসানো হয়। পাইপলাইন দিয়ে গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে ছয়টি ট্যাপকলও বসানো হয়েছিল। কিন্তু গোড়াতেই গলদ। নিম্নমানের পরিশোধন যন্ত্র লাগানোয় জল ফিল্টারই হচ্ছে না বলে অভিযোগ। আরেক বাসিন্দা তরুণ বিষ্ণু রায় বলেন, ‘ট্যাপকলের জল কেউ মুখে তুলতে পারছেন না। কাপড় কাচা ও গোরুকে খাওয়ানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের ভরসা সেই কুয়ো ও নলকূপের জলই। দীর্ঘদিন ওই জল খেলে পেটের রোগে ভুগতে হবে। কিছু করুক প্রশাসন।’
এদিকে, সমস্যা সমাধানে হেলদোলই নেই প্রশাসনের বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। তবে কয়েকদিন আগেও ট্যাংক পরিষ্কার করা হয় গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে। তারপরেও অবস্থার উন্নতি হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের ভূমিদাতা গোপালচন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ‘দুটি জল পরিশোধন যন্ত্র লাগানো থাকলেও জলে প্রচুর আয়রন। ওই যন্ত্রের আয়রন ফিল্টারের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সকলে।’