সুস্মিতা গঙ্গোপাধ্যায়, কলকাতাঃ ইন্ডিয়ান সুপার লিগের তরফ থেকে এদিন সামাজিক মাধ্যমে হোসে ফ্রান্সিসকো মোলিনা ও আন্দ্রেই চেরনিশভের ছবি দিয়ে সমর্থকদের উসকে দেওয়া হয়েছে ‘প্রেডিক্ট দ্য স্কোর,’ বলে।
নীচের মন্তব্যের জায়গায় দুই তরফে অন্যান্য নানা বিষয়ে গোলযোগ বেঁধে গেলেও একটা ব্যাপারে বেশ মিল। বেশিরভাগ সমর্থকই কেন যেন ম্যাচটা ড্র হতে পারে বলে মনে করছেন। শতাব্দী প্রাচীন দুই ক্লাবের সমর্থকদের গরিষ্ঠ অংশ সম্ভবত মনে করছেন, ঝুঁকিহীন ফুটবল খেলবে তাঁদের দল। কর্তাদের মধ্যে আবার সাদা-কালোর বেলাল আহমেদ খান যদিও বা, ‘আমরা তো আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নিজেদের দমে আইএসএল খেলছি, ওরা তো মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট’ বলে খানিক হাওয়া গরম করলেও মোহনবাগানে সব স্পিকটি নট। কারণ তাদের হেভিওয়েট দল এখনও মাঠে খাবি না খেলেও চাপেই আছে। এই অবস্থায় যদি ফের হারে দল তাহলে তাঁকেও যে স্পেনের বিমান ধরতে হতে পারে, এমন সম্ভাবনার কথা এদিন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বেশ কয়েকবার মোলিনা শুনলেন সাংবাদিক সম্মেলনে। মোলিনা হেসে উড়িয়ে দিলেও জেসন কামিংস একটু বিরক্তি নিয়ে বললেন, ‘এখানে সমর্থকরা তাড়াতাড়ি অধৈর্য হন। মরশুম তো এখনও অনেক বাকি।’
কামিংসের মতো ধৈর্য সমর্থকদের নেই। মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে হারতে হলে নিশ্চিতভাবেই শনিবারের বারবেলায় উত্তাল হবে সবুজ-মেরুন গ্যালারি। তাই একমাত্র লক্ষ্য যে তিন পয়েন্ট সেটা বলতে দ্বিধা করেন না মোলিনা, ‘ওরা প্রথম তিন ম্যাচে সত্যিই খুব ভাল খেলছে। তবে আমাদের তিন পয়েন্ট পেতেই হবে এই ম্যাচে। ছেলেদের পরিশ্রমে আমি খুশি। আরও খুশি হব
তিন পয়েন্ট পেলে।’ তিনি নিজেও জানেন, তাঁর দলে ডিফেন্সের হাল তো খারাপই কিন্তু যাঁদের উপর ভরসা ছিল সেই আক্রমণভাগই মূলত ডোবাচ্ছে দলকে। কামিংস-দিমিত্রিস পেত্রাতোসরা গোলের সামনে একেবারে সাদামাটা। একমাত্র গ্রেগ স্টুয়ার্টের মধ্যেই খানিক চেষ্টা আছে। সম্ভবত সেই কারণেই মরশুমের প্রথম ডার্বিতে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে দুই বিদেশি ডিফেন্ডার আলবার্তো রডরিগেজ ও টম আলড্রেডকে নামাচ্ছেন বলেই সামনে প্রথম থেকে নামাতে চলেছেন জেমি ম্যাকলারেনকে। স্টুয়ার্ট-দিমি-কামিংসকে হয়তো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলাবেন। আশিক কুরনিয়ন ফিট হয়ে গেলেও অনুশীলনেই পরিষ্কার, মনবীর সিংয়ের সমস্যা আছে। তবু দুইজনকেই হয়তো ১৮ জনের দলে দেখা যাবে সাহাল আব্দুল সামাদ না থাকায়।
ডুরান্ড কাপ ছাড়া সম্প্রতি মহমেডান খুব একটা যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে খেলেনি। তবু চেরনিশভ বলে গেলেন, ‘ওরা বড় দল, অনেক নামী-দামি ফুটবলার দলে। এরকম একটা দলের বিরুদ্ধে যখন খেলবে তখন যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি হতে হবে। আসল হল নিজেদের উপর আস্থা। ওদের শ্রদ্ধা জানিয়েই বলছি, ম্যাচ ৫০-৫০।’ আত্মবিশ্বাসী হওয়ার অন্যতম কারণ, শেষ ম্যাচে চেন্নাইয়ান এফসি-কে তাদের মাঠে গিয়ে বধ করে আসা। অ্যালেক্সিস গোমেজ সহ প্রায় সবারই ফর্মে থাকা। সেখানে সদ্য বেঙ্গালুরুতে গিয়ে ৩ গোলের লজ্জা নিয়ে ফিরেছেন কামিন্সরা। সাবধানী চেরনিশভ তবু বললেন, ‘ওই জয়ে আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। কিন্তু হেরে যাওয়ায় মোহনবাগান বাড়তি তাগিদ দেখাবে, বিপজ্জনক হয়ে উঠবে।’ তাঁর দলে এদিনই যোগ দিয়েছেন নতুন ডিফেন্ডার ফ্লোরেন্ট ওগিয়ের। খেলবেন কিনা তা পরিষ্কার নয়।
সমর্থকরা যাই বলুন না কেন, দুই দলই যে খানিকটা মরিয়া চেষ্টা করবে, তার আভাস থাকছেই। এখন দেখা শেষ হাসি কারা হাসতে পারে!

