গাজোল: সাত সকালে গাজোল স্টেট জেনারেল হাসপাতালের (Gazol Hospital) প্রসূতি বিভাগ থেকে এক সদ্যোজাতের চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠল হাসপাতাল চত্বর। স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় হাসপাতাল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরের এক এলাকা থেকে শিশুসহ ওই মহিলাকে আটক করা হয়। খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামলাতে গাজোল থানার পুলিশ (Gazol Police Station) ঘটনাস্থলে এলে উত্তেজিত জনতা তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। এই বিক্ষোভের মধ্যে সামান্য বল প্রয়োগ করে উত্তেজিত জনতাকে সরিয়ে অভিযুক্ত মহিলাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
জানা গেছে, প্রসূতি ওই মহিলার নাম হাসি সাহা। তার বাবার বাড়ি বুজরুক বান্ধাইল এলাকায়। বিয়ে হয়েছে পুরাতন মালদাতে। গত বুধবার তিনি ভর্তি হয়েছিলেন গাজোল স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার তিনি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। এদিন হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়ার কথা ছিল। এক মহিলাকে বাচ্চাটি দেখতে বলে তিনি জেরক্স করতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন বাচ্চাও নেই এবং মহিলাটিও নেই। এরপরই তিনি কান্নাকাটি এবং চেঁচামেচি শুরু করতেই ছুটে আসেন তার পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতাল চত্বরে খোঁজাখুঁজির পরেও শিশুসহ ওই মহিলার খোঁজ না মেলায় আশেপাশের এলাকায় তল্লাশি শুরু হয়। অবশেষে হাসপাতাল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে বেলডাঙ্গি এলাকা থেকে বাচ্চা সহ আটক করা হয় অভিযুক্ত মহিলাকে। তাকে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। এরপরেই শুরু হয় উত্তেজনা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে শিশু চুরির সঙ্গে যুক্ত ওই মহিলার নাম প্রিয়া পাল। বাড়ি গরুহাট সংলগ্ন পালপাড়া এলাকায়। বেশ কয়েকদিন ধরেই অভিযুক্ত ওই মহিলা প্রসূতি বিভাগে ঘোরাঘুরি করছিলেন। প্রসূতি বিভাগে ভর্তি থাকা বিভিন্ন মহিলাদের সঙ্গে গিয়ে গল্প করতেন। হাসি দেবী ভেবেছিলেন, হয়ত তিনি কোনও প্রসূতির আত্মীয়া। তাই বিশ্বাস করে নিজের সদ্যোজাত সন্তানকে ওই মহিলার কাছে রেখে গিয়েছিলেন। এরপর একরত্তিকে নিয়ে চম্পট দেয় অভিযুক্ত।
ঘটনা প্রসঙ্গে হাসপাতাল সুপার (Hospital Super) ডাঃ অঞ্জন রায় বলেন, ‘আমার দীর্ঘদিনের কর্মজীবনে এমন ঘটনা প্রথম দেখলাম। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। পুলিশও যথেষ্ট তৎপরতা দেখিয়েছে। তবে হাসপাতালের সুরক্ষার স্বার্থে দ্রুত প্রাচীর দিতে হবে। যাতে বাইরের কেউ প্রবেশ করতে না পারে।’