নাগরাকাটা: গত কয়েক বছর ধরেই ধাপে ধাপে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। এতে গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দারা নানা বাড়তি সুযোগসুবিধার আওতায় আসছেন। এবার চলতি আর্থিক বর্ষে উত্তরবঙ্গের ৬ জেলার ১৯২টি গ্রামীণ উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রকে সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে উন্নীত করার প্রশাসনিক অনুমোদন মিলল। গোটা রাজ্যের ২০ জেলা মিলিয়ে সংখ্যাটি ৭৪৪। এজন্য প্রতিটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র পিছু বরাদ্দ করা হয়েছে ৭ লক্ষ টাকা।
অর্থাৎ গোটা রাজ্যের সবক’টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র মিলিয়ে বরাদ্দের পরিমাণ ৫২ কোটি ৮ লক্ষ টাকা।
এ ব্যাপারে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ অসীম হালদারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’
উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে ২৪টি, দক্ষিণ দিনাজপুরে ২টি, জিটিএ-তে ৩টি, জলপাইগুড়িতে ৭টি, মালদায় ৯২টি ও উত্তর দিনাজপুরে ৬৪টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিণত হবে। বরাদ্দকৃত টাকা দিয়ে কী কী কাজ করতে হবে সেটাও স্বাস্থ্য দপ্তরের জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন শাখার তরফে ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির মেরামতি, ইউপিএস-রেফ্রিজারেটরের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ, সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির দায়িত্বে থাকা কমিউনিটি হেলথ অফিসারদের (সিএইচও) বসার কেবিন, টিউবওয়েল ও জলের পাম্প সহ নানা কাজ হবে বলে জানা গিয়েছে।
এছাড়া, সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি থেকে অন্তঃসত্ত্বা, প্রসূতিদের পরিচর্যা, শিশুদের টিকাকরণ, নানা রোগের প্রতিষেধক প্রদানের মতো নিয়মিত পরিষেবা তো রয়েইছে। বাড়তি হিসেবে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে ডাক্তার দেখানোর ব্যবস্থাও চলছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। এর ফলে গ্রামীণ এলাকার রোগীরা তাঁদের বাড়ির আশপাশের সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে অনলাইনে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ নিতে পারবেন।
জলপাইগুড়ি জেলার মোট ৩৮৪টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে বেশিরভাগ আগেই সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এবার যে ৭টিকে নতুন করে বেছে নেওয়া হয়েছে সেগুলির মধ্যে রয়েছে নাগরাকাটা ব্লকের ৫টি ও রাজগঞ্জ ব্লকের ২টি। মালদার কালিয়াচক এক নম্বর ব্লকে ১৭টি, দুই নম্বর ব্লকে ১৩টি, তিন নম্বর ব্লকে ১৭টি, মালদা (পুরাতন) ব্লকে ৬টি, মানিকচক ব্লকে ১২টি, রতুয়া এক নম্বর ব্লকে ১৬টি, রতুয়া দুই নম্বর ব্লকে ১১টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে উন্নীতকরণের তালিকায় রয়েছে।
এছাড়া, কোচবিহার মেখলিগঞ্জ ব্লকে ৫টি, সিতাইয়ে ৫, শীতলকুচিতে ২, তুফানগঞ্জ এক নম্বর ব্লকে ১১টি ও দুই নম্বর ব্লকে ১টি রয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকে ২টি, জিটিএ এলাকার সুকনায় ১টি, রংলি রংলিয়টে ২টি, উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরে ৯টি, হেমতাবাদে ১টি, ইসলামপুরে ১৭টি, ইটাহারে ১২টি, কালিয়াগঞ্জে ১টি, করণদিঘি ব্লকের ২৪টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রও সংস্কার করা হবে।
অল বেঙ্গল প্যারামেডিক্স অ্যান্ড মেডিকেল টেকনলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘সত্যিই প্রশংসনীয় কাজ। তবে পরিষেবার মান আরও উন্নত করতে নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে।’