জলপাইগুড়িঃ দুজনের সম্পর্কে আগেই তিক্ততা ছিল। তা আরও তিক্ত হল। লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের হার নিয়ে দলের প্রাক্তন যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামীদের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় যুব সংগঠনের বর্তমান সভাপতি সন্দীপ ছেত্রীকে ব্যক্তিগত আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে।
সৈকতের ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন জেলা যুব সাধারণ সম্পাদক অজয় সাহা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টে লিখেছেন, ‘জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি আপনাকে বলছি, জলপাইগুড়ি লোকসভা নির্বাচনে আপনি কোথায় ছিলেন?’ তাতে সৈকত অনুগামী যুব নেতা জয়ন্ত ভৌমিক লেখেন, ‘উনি জেলা নেত্রীর নির্দেশে আদর্শ নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে বালি–পাথর পৌঁছে দেওয়ার কাজে নিয়োজিত ছিলেন।’ অজয় পালটা লেখেন, ‘বর্তমান যুব সভাপতি নির্বাচনি কোর কমিটি গঠন করেছিলেন। তাঁদের কয়েকজন বালি–পাথরের কারবার, ঠিকাদারিতে সিদ্ধহস্ত। দলটাকে বিক্রি করেননি, এটাই আমাদের ভাগ্য।’
পোস্টটিকে ঘিরে এরপর থেকেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। সন্দীপ শুক্রবার জলপাইগুড়িতে পার্টি অফিসে বৈঠক করেন। সৈকত অনুগামীদের পোস্ট নিয়ে সেখানে ব্যাপক আলোচনা হয়। সৈকত অনুগামী এক যুব নেতার বাড়ি ঘেরাওয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কয়েকজনের বাধায় শেষপর্যন্ত অবশ্য তা বাস্তবায়িত হয়নি। সন্দীপ বলেন, ‘গত নভেম্বরে দায়িত্ব পাওয়ার পর সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর চেষ্টায় নামি। ভোটের প্রচারের জন্য জোরকদমে প্রচার চালিয়েছি। যিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন তিনি দল বা সংগঠনে কোনও পদে নেই। তিনি যা বলেছেন তাতে একপ্রকার দলের বিরুদ্ধেই বলেছেন। যা বলার জেলা নেতৃত্বকে বলেছি। দল তাঁর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয় সেটাই দেখার। সৈকতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘আমি দলের যুব সংগঠনে নেই। তাছাড়া, কে কী পোস্ট করেছেন সে বিষয়ে কিছুই জানি না। কোনও মন্তব্যও করতে চাই না।’
সন্দীপ অনুগামীরাও অবশ্য ছাড়ার পাত্র নন। অজয়ের ওই পোস্টে সন্দীপ অনুগামী গৌতম রায়ের মন্তব্য, ‘সন্দীপ ছেত্রী সবসময় ছিল। তোমরা কোথায় ছিলে?’ সূর্য নামে একজন লিখেছেন, ‘২০১৯ সালে সৈকত জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি ছিলেন। দল তো তখন এবারের থেকেও বেশি ভোটে হেরেছিল।’
এদিকে, এভাবে কাদা ছোড়াছুড়িতে দলের সংহতি নষ্ট হচ্ছে বলে শ্যামল রায়, মিন্টু সাহার মতো অনেকেই মন্তব্য করেছেন। ফোন না ধরায় জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।