শুভদীপ শর্মা, ক্রান্তি: দল ছাড়ায় এক পঞ্চায়েত সদস্যাকে মারধরের অভিযোগ উঠল বিজেপির (BJP) মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী দীপা বণিকের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ক্রান্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের আমিনেরটারি এলাকায়। আহত ওই পঞ্চায়েত সদস্যা বর্তমানে জলপাইগুড়ি সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ক্রান্তি ফাঁড়ির পুলিশ। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দীপা।
আমিনেরটারি ২০/২২২ নম্বর এলাকায় গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির প্রতীকে জয়লাভ করেন কামনাবালা বিশ্বাস রায়। গত রবিবার তিনি লাটাগুড়িতে তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে গিয়ে তৃণমূলে যোগদান করেন। তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ ও ক্রান্তি ব্লক সভাপতি মহাদেব রায়। এরপর এই পঞ্চায়েত সদস্যা গ্রামে না ফিরে নিজের আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে চলে যান। বুধবার রাতে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন।
অভিযোগ, এদিন দুপুরে বিজেপি মহিলা মোর্চার জলপাইগুড়ি জেলা সভানেত্রী দীপা বণিক লোকজন নিয়ে এসে চড়াও হন কামনাবালার বাড়িতে। দীপার নেতৃত্বে তাঁকে ও তাঁর স্বামী তাপস রায়কেও ব্যাপক মারধর করা হয়। কামনাবালা দাবি করেন, বিজেপিতে থেকে তিনি উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করতে পারছিলেন না। তাই বাধ্য হয়ে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। এদিন তাঁর বাড়িতে দীপা বণিকের নেতৃত্বে বেশ কিছু বিজেপি কর্মী চড়াও হয়। তাঁকে পঞ্চায়েতের সদস্যপদ থেকে ইস্তফাপত্র লিখে দিতে হবে বলে দাবি করা হয়। তাতে রাজি না হওয়ায় স্বামী-স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
খবর পেয়ে ক্রান্তি ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুজনকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। তাঁদের মধ্যে পঞ্চায়েত সদস্যার আঘাত গুরুতর থাকায় বর্তমানে তাঁর চিকিৎসা চলছে জলপাইগুড়ি সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে। তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী বলেন, ‘বিজেপি তাদের দলের লোককে ধরে রাখতে পারছে না। কেউ দল ছেড়ে চলে গেলে তাঁকে মারধর করা হচ্ছে। দীপা বণিক একজন মহিলা হয়ে আরেকজন মহিলাকে এভাবে মারধর করেছেন। এর থেকে লজ্জার আর কী হতে পারে?’ তৃণমূলের ক্রান্তি ব্লক সভাপতি বলেন, ‘ক্রান্তিকে অশান্ত করার চক্রান্ত চালাচ্ছে বিজেপি।’
দীপা অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি করার জন্যই ওই পঞ্চায়েত সদস্যা তৃণমূলে যোগদান করেছেন। যেহেতু তিনি তৃণমূলের যোগদান করেছেন তাই তাঁর কাছে স্থানীয় গ্রামবাসী পঞ্চায়েতের সদস্যপদ ছাড়ার কথা লিখে দেওয়ার জন্য চিঠি চাইতে গিয়েছিলেন। ওই পঞ্চায়েত সদস্যাকে মারধর করার অভিযোগ ভিত্তিহীন। উলটে তিনিই গ্রামের লোকজনকে ধাক্কাধাক্কি করেছেন।’
ক্রান্তি ফাঁড়ির ওসি বুদ্ধদেব ঘোষ জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।