সৌরভ দেব, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজে (Jalpaiguri Medical College) চিকিৎসকদের বিশ্রামঘরের দরজায় লাগানো হবে বায়োমেট্রিক লকিং সিস্টেম। আঙুলের ছাপেই খুলবে দরজা। মেডিকেল কলেজে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি সংস্থা ওয়েবেল এই বায়োমেট্রিক লকিং দরজা লাগানোর সমীক্ষা শুরু করেছে। অন্যদিকে, মেডিকেল কলেজের ভিতর জেলা হাসপাতালে বহিরাগতদের প্রবেশ রুখতে সীমানা প্রাচীরের উচ্চতা বাড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। হাসপাতাল চত্বরে নিরাপত্তার স্বার্থে নতুন করে প্রবেশপথে গেট বসানোর কাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের এমএসভিপি ডাঃ কল্যাণ খান বলেন, ‘আমরা চিকিৎসকদের ডিউটি রুম এবং বিশ্রামঘরের পরিকাঠামো উন্নয়ন করেছি। সেইসঙ্গে বিশ্রামঘরে অত্যাধুনিক বায়োমেট্রিক লকিং দরজা লাগানোর কথা ভাবা হয়েছে। কোথায় কীভাবে এই দরজা লাগানো হবে সেই বিষয়ে ওয়েবেল সমীক্ষা করে আগে রিপোর্ট দেবে। সেইমতো কাজ করা হবে। এছাড়াও আমরা জেলা হাসপাতালে সীমানা প্রাচীর এবং গেট লাগানোর কাজ শুরু করে দিয়েছি। কাজ সম্পন্ন হলে আমরা একবার জুনিয়ার এবং সিনিয়ার চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়ে কী কী পরিকাঠামো উন্নয়ন হল তা দেখাব। সেক্ষেত্রে তাঁদের যদি কোনও পরামর্শ থাকে সেটাও শোনা হবে।’
আরজি করের ঘটনার (RG Kar Incident) পর রাজ্যের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের পাশাপাশি জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজেও নিরাপত্তার সুনিশ্চিত করতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সুপারস্পেশালিটি এবং জেলা হাসপাতাল মিলিয়ে প্রায় ২৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর কাজ প্রায় শেষ। নতুন করে ৬৯ জন নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করেছে কর্তৃপক্ষ।
এতদিন পর্যন্ত জেলা হাসপাতাল চত্বর ছিল কার্যত উন্মুক্ত। সন্ধ্যার পর হাসপাতাল চত্বরের বিভিন্ন জায়গায় নেশার আসর বসত বলে অভিযোগ। বহিরাগতদের প্রবেশ রুখতেই সীমানা প্রাচীর এবং প্রতিটি রাস্তার মুখে গেট তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় মেডিকেল কলেজে কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য ভবন থেকে অনুমতি মিলতেই শুরু হয়েছে সীমানা প্রাচীর এবং গেট তৈরির কাজ। জানা গিয়েছে, হাসপাতালের যে অংশে সীমানা প্রাচীর নেই, সেখানে নতুন করে প্রাচীর তৈরি হবে। একইভাবে যে জায়গাগুলিতে সীমানা প্রাচীরের উচ্চতা কম ছিল সেইসব জায়গায় প্রাচীরের উচ্চতা তিন ফুট পর্যন্ত উচ্চতা বাড়ানোর হচ্ছে। ব্লাড ব্যাংক এবং নার্সিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট অফিসের সামনে দিয়ে যে রাস্তা দুটি হাসপাতালে ঢুকেছে সেখানে নতুন করে গেট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার স্বার্থে ডিউটি রুম এবং বিশ্রামঘরের পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হয়েছে। এবার সেই রুমের দরজায় বায়োমেট্রিক লক লাগানোর কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে যে, ওয়ার্ডে যে সমস্ত জুনিয়ার এবং সিনিয়ার চিকিৎসক ডিউটি করেন তাঁদের আঙুলের ছাপ নিয়ে বায়োমেট্রিক মেশিনের ডেটা ব্যাংকে যুক্ত করা থাকবে। ফলে বাইরের কেউই সেই ঘরে ঢুকতে পারবেন না। একইভাবে কখন কোন চিকিৎসক সেই বিশ্রামঘরে ঢুকছেন তারও তথ্য যন্ত্রে থেকে যাবে। প্রয়োজনে সেই তথ্য জানতে পারবে কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ওয়াকিটকি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।