পূর্ণেন্দু সরকার ও অনীক চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: সাধারণ মানুষ দাবি জানাচ্ছেন, তাঁদের এলাকার স্টেশনগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের স্টপ দিতে হবে। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে সেই দাবি মেনে নিতে পারছে না রেল। তাই উত্তরবঙ্গের রেলস্টেশনগুলির পরিকাঠামোর উন্নতির লক্ষ্যে রবিবার থেকে বিভিন্ন রেলস্টেশন পরিদর্শনে বের হচ্ছেন জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) সাংসদ জয়ন্ত রায় (Jayanta Roy)। তাঁর সঙ্গে থাকবেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আধিকারিকরা। কোচবিহারের হলদিবাড়ি থেকে জলপাইগুড়ি টাউন, রোড স্টেশন, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, মালবাজার, এনজেপি, চ্যাংরাবান্ধা ইত্যাদি স্টেশন রয়েছে সাংসদের এই পরিদর্শনের ক্যালেন্ডারে।
উত্তরবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন এনজেপি তাঁর সংসদীয় এলাকার মধ্যে পড়েছে। উত্তরবঙ্গে নতুন নতুন দূরপাল্লার ট্রেনের স্টপ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন খামতির বিষয়গুলি উঠে এসেছে। অধিকাংশ স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম বড় না থাকায় সাধারণ মানুষের দাবি উঠলেও বেশি কোচের দূরপাল্লার ট্রেনের স্টপ দেওয়া যাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি সংশ্লিষ্ট রেলস্টেশনে পিট পরিকাঠামো, টার্মিনাল স্টেশনের পরিকাঠামোর উন্নতি না করা পর্যন্ত নতুন নতুন ট্রেনের স্টপ দেওয়া যাচ্ছে না বলে সাংসদ জানান।
জলপাইগুড়ি টাউন, রোড স্টেশন ও ধূপগুড়ি স্টেশনে অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় পরিকাঠামো উন্নয়ন শুরু হয়েছে। যেমন, জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে ১ এবং ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম বড় থাকলেও ২ নম্বরের পাশের প্ল্যাটফর্মটির লাইন সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। লিফট বসিয়ে প্ল্যাটফর্মে ডিজিটাল প্যানেল বসানো হয়েছে। কিন্তু জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে এখনও ২৪ বগির দার্জিলিং মেল দাঁড়ালে প্ল্যাটফর্মের বাইরে কয়েকটি সংরক্ষিত কামরা চলে যায়। সেখানে ১ নম্বরের পাশাপাশি ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মেরও সম্প্রসারণের প্রয়োজন রয়েছে।
এদিকে, উত্তরবঙ্গ থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে দূরপাল্লার ট্রেন পরিষেবা চালুর বিষয়ে রেল পরিকল্পনা নিয়েছে। কিন্তু তার আগে স্টেশনের পরিকাঠামোর উন্নয়ন দরকার। ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন। তার আগে নিজের লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলি পরিদর্শন শেষ করতে চান সাংসদ। কারণ দিল্লি গিয়ে রেলমন্ত্রী এবং রেল বোর্ডকে উত্তরবঙ্গের একাধিক রেলস্টেশনের পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে একটা লিখিত প্রস্তাব দিতে চান সাংসদ।
আলিপুরদুয়ার থেকে ডুয়ার্স রুট ধরে শিয়ালদাগামী কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস ট্রেনের বগি বাড়ানোর দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু ডুয়ার্সের যে সমস্ত রেলস্টেশনে কাঞ্চনকন্যা দাঁড়ায়, আগে সেখানকার প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারিত করা দরকার। সেই রেলস্টেশনগুলিও পরিদর্শন করবেন বলে জানান জয়ন্ত রায়।
উত্তরবঙ্গের সবজি, ভুটানের ডলোমাইট, বোল্ডার সহ আরও অনেক সামগ্রী সহজে এখান থেকে মালগাড়িতে করে অন্য রাজ্যে পাঠানো সম্ভব। কিন্তু সেক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট স্টেশনগুলির প্ল্যাটফর্ম আগে সম্প্রসারণ করতে হবে।
এর আগে দার্জিলিং মেলকে হলদিবাড়ি থেকে চালানো, হলদিবাড়ি সুপারফাস্ট ট্রেনে তিনটি নতুন এসি স্লিপার কোচ যুক্ত করা, জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে শিয়ালদাগামী পদাতিক এক্সপ্রেসের স্থায়ী স্টপ তৈরি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন জয়ন্ত। এবার সাংসদের পরিদর্শনের পর স্টেশনগুলোর পরিকাঠামো কতদূর উন্নত হয়, সেদিকে তাকিয়ে সকলে।