শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: প্লাস্টিক দাও, প্রকৃতি বাঁচাও, আর পুরস্কার নাও। পরিবেশ রক্ষায় এমনই ক্যাচলাইন তৈরি করে স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে অভিনব প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ (Jalpaiguri)। বুধবার জেলার প্রতিটি প্রাথমিক, উচ্চপ্রাথমিক, উচ্চবিদ্যালয়ের পাশাপাশি শিশুশিক্ষাকেন্দ্র, মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র, মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীরা এতে অংশ নেবে। বিষয়টি শুধু এখানেই থেমে নেই, স্কুল ও আশপাশের লোকালয় থেকে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত শুকনো প্লাস্টিক সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্লকে থাকছে প্রথম ৩ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য পুরস্কার। পাশাপাশি, সেরা ৩টি স্কুলকে দেওয়া হবে জেলা স্তরের পুরস্কার। অতিরিক্ত জেলা শাসক (জেলা পরিষদ) রৌনক আগরওয়াল বলেন, ‘প্লাস্টিকমুক্ত পরিবেশ গঠনে ছাত্রছাত্রীদের উদ্বুদ্ধ ও সচেতন করার লক্ষ্যে এই পরিকল্পনা। আগামী ৩ তারিখ সেরাদের পুরস্কৃত করা হবে।’
জানা গিয়েছে, পড়ুয়ারা যে প্লাস্টিক সংগ্রহ করবে তা আলাদাভাবে প্রত্যেকের নামে স্কুলগুলি অন্য আরেকটি বড় প্লাস্টিকে অস্থায়ী ডোনেশন সেন্টারে রেখে দেবে। মেপে দেখা হবে কে কতটা প্লাস্টিক সংগ্রহ করেছে। সবমিলিয়ে একেকটি স্কুল কত পরিমাণ প্লাস্টিক দিল, সেই তথ্য নথিবদ্ধ করা হবে। বিডিও অফিসগুলি এরপর প্রতিটি স্কুল থেকে ওই প্লাস্টিক প্রক্রিয়াকরণের জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইউনিটগুলিতে পাঠিয়ে দেবে। ব্লক স্তরের সেরা ৩ জনের জন্য আর্থিক পুরস্কারমূল্য যথাক্রমে ৩, ২ এবং ১ হাজার টাকা। জেলা স্তরের সেরা ৩ স্কুলকে দেওয়া হবে যথাক্রমে ২০, ১০ ও ৫ হাজার টাকা।
ফি বছর ৩ জুলাই আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক ব্যাগমুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হয়। নতুন প্রজন্মের কাছে প্লাস্টিকের কুফল তুলে ধরে সচেতনতা তৈরির জন্য এবার জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে এমন উদ্যোগ। ছাত্রছাত্রীরা কীভাবে প্লাস্টিক সংগ্রহ করবে, স্কুলগুলি পড়ুয়াদের কীভাবে সহযোগিতা করবে, তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। পড়ুয়াদের যাতে গ্লাভস, মাস্ক দিয়ে সহযোগিতা করা হয়, জানিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রধান শিক্ষক ও টিআইসিদের। কর্মসূচি নিয়ে জেলা পরিষদের তরফে ভার্চুয়ালি একটি সভা আয়োজনের পর মঙ্গলবার সর্বত্র গাইডলাইন পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্কুলগুলিকে প্লাস্টিকের বিপদ নিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে সচেতনতামূলক আলোচনা করার কথাও বলা হয়েছে।
এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে শিক্ষক মহল। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সভাপতি অঞ্জন দাস বলেন, ‘প্রতিযোগিতাকে ঘিরে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে উদ্দীপনা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি প্লাস্টিকমুক্ত স্কুল গড়ে তুলতেও এই কর্মসূচি দারুণভাবে সহায়ক হবে।’ এবিটিএ-র জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ রায় বলেন, ‘ভালো উদ্যোগ। তবে দু’একদিনের জন্য নয়, ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। তবেই এর আসল সুফল মিলবে।’