বাণীব্রত চক্রবর্তী, ময়নাগুড়ি: জলের স্রোতে বড় নর্দমার একাংশ সহ জরদা নদীর বাঁধ এবং ঘাট ভেসে গেল নদীগর্ভে। সেইসঙ্গে বিলীন হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা মিলন মিত্রর বাঁশ গাছের ঝোপ। বিপজ্জনক পরিস্থিতি হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা নদীর ঘাটে যেতে পারছেন না। এখন আর নদীঘাটের কোনও অস্তিত্ব নেই। ঘটনাটি ময়নাগুড়ি (Mainaguri) পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের গোবিন্দনগরের। ভাঙন বাড়তে পারে এই আশঙ্কায় রাতের ঘুম উড়েছে বাসিন্দাদের। স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলারের গোচরে আনেন বিষয়টি।
এবিষয়ে কাউন্সিলার সুপ্রিয় দাস বৃহস্পতিবার ময়নাগুড়ি সেচ দপ্তরকে লিখিতভাবে জানান।
শুক্রবার সেচ দপ্তরের এসডিও সমীর বর্মন বলেন, ‘ওয়ার্ড কাউন্সিলার বিষয়টি আমাদের লিখিতভাবে জানিয়েছেন। সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’
১৭ নম্বর ওয়ার্ডের গোবিন্দনগরপাড়ায় ঢুকলে দেখা যাবে, মিলন মিত্রর বাড়ির সামনে প্রধান রাস্তার উপর কালভার্ট। তিন দিক থেকে তিনটি নর্দমা এসে মিলিত হয়েছে সেই কালভার্টে। সেখান থেকে একটি ৭০ মিটার লম্বা বড় নর্দমা চলে গিয়েছে জনবসতির মধ্য দিয়ে জরদা নদীর ঘাটে। গত কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টির জেরে নদী সংযোগকারী নর্দমার একাংশ ভেঙে গিয়েছে। সেইসঙ্গে বোল্ডার, বাঁধ সহ নদীর ঘাট ভেঙে পড়েছে।
বাসিন্দা মিলন মিত্রর কথায়, ‘যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে মেরামতির কাজ না করলে আমাদের বাড়িঘরও ভেসে যেতে পারে।’ নদীঘাটের ভয়ংকর পরিস্থিতি বলে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দা জ্যোৎস্না কর্মকারও।
গোটা ওয়ার্ডের দূষিত জল ওইসব নর্দমা দিয়ে এসে পড়ে জরদা নদীতে। এতে নদীর জলও দূষিত হচ্ছে। ভাঙনের মুখে শম্ভু সেনের বাড়িও। তিনি বলেন, ‘ভাঙনের আশঙ্কায় রাতের ঘুম কেড়েছে। যেভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে তাতে ভাঙন বাড়তে থাকবে। বিষয়টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলারকে দেখানো হয়েছে।’ ভাঙনের আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা সুফলা রায়ও। এই পরিস্থিতিতে পুর কর্তৃপক্ষ এবং সেচ দপ্তর দ্রুত পদক্ষেপ করুক সেটাই চাইছেন তাঁরা।
পরিকল্পনা ছাড়া যেখানে-সেখানে নর্দমা তৈরি করা এবং এলাকার নোংরা জল দূষণমুক্ত করে নদীতে ফেলার কোনও বন্দোবস্ত যে নেই তা এখানেই স্পষ্ট হয়েছে। মাস্টার প্ল্যান তৈরি না করেই কাজ করার ফল এখন ভুগতে হচ্ছে নাগরিকদের। যদিও ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘পরবর্তীতে জল দূষণমুক্ত করে নদীতে ফেলার বিষয়ে প্রকল্প তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব।’