গাজোল: এশিয়ান তিরন্দাজি প্রতিযোগিতায় দলগত বিভাগে গাজোলের ছেলে জুয়েলের সোনা জেতার খবরে আনন্দের বাঁধ ভাঙল গ্রামে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই দলে দলে গ্রামবাসীরা এসে উপস্থিত হন জুয়েলের বাড়িতে। ছেলের সাফল্যে আনন্দে কেঁদে ফেলেন জুয়েলের বাবা নিশম সরকার এবং মা নিরতি সরকার। গ্রামের ছেলের গর্বে গর্বিত গ্রামবাসীরাও।
১২ নম্বর জাতীয় সড়ক ছেড়ে পূর্বদিকে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা রাস্তা ধরে এগিয়ে গেলে পড়বে গোবিন্দ মোড়। সেখান থেকে কংক্রিটের রাস্তা ধরে কিছুদূর যাওয়ার পর লাল মাটির রাস্তা এবং তারপর বেশ কিছুটা কাঁচা মাটির রাস্তা ধরে পৌঁছানো পান্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ধোবাপাড়া গ্রামে জুয়েলের বাড়িতে। যাকে বলে একেবারে অজ পাড়া গ্রাম। মূলত তপশিলি জাতি এবং উপজাতি অধ্যুষিত গ্রাম। ওই গ্রামেই ছোট একটি মাটির ঘরে সংসার নিশম সরকারের। ছেলের সোনা পাওয়ার খবর নিশমবাবু জানলেও পাড়ার প্রায় সকলেরই কাছে বিষয়টি ছিল অজানা। উত্তরবঙ্গ সংবাদে খবরটি দেখার পর গোটা এলাকায় হইচই পড়ে যায়। প্রচুর মানুষের ভিড় জমান তার বাড়িতে।
ছেলের সাফল্যে এদিন কেঁদে ফেলেন বাবা নিশম সরকার এবং মা নিরতি সরকার। তারা জানালেন, মাত্র বিঘা দুয়েক জমি রয়েছে তাদের। জমিতে চাষবাস করে কোনও রকমে চলে সংসার। বহুকষ্টে ছেলেকে মানুষ করছিলেন তারা। তিরধনুক খেলার দিকে ঝোঁক থাকায় তারা আর বাধা দেননি। প্রথমে স্কুল এবং তারপর গাজোলে প্রশিক্ষণ নিত জুয়েল। সেখান থেকে সুযোগ পায় ঝাড়গ্রামের অ্যাকাডেমিতে। তারপর বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাফল্য আসতে থাকে। তবে ও যে দেশের হয়ে খেলতে যাবে এবং সেখানে গিয়ে সোনা জিতবে এ কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি তারা। তারা চাইছেন ছেলে আরও বড় জায়গায় যাক। এই মুহূর্তে ইরাক থেকে দিল্লি এসে পৌঁছেছে জুয়েল। আপাতত ঝাড়গ্রাম আর্চারি অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেবে। জুয়েল জানায়, তার লক্ষ্য অলিম্পিক খেলা এবং সেখান থেকে পদক জয়। আপাতত সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য চলছে লড়াই।