ঝাড়গ্রাম: তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলা ও রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে হেনস্তার ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। সেই ঘটনার জেরে শনিবার কুর্মি নেতা রাজেশ মাহাতো সহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁকে কোচবিহারের স্কুলে বদলি করা হয়েছে। রাজেশের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও মুক্তির দাবিতে একদিকে যখন পথে নেমেছেন কুর্মিরা, অন্যদিকে, বীরবাহাকে হেনস্তার প্রতিবাদে ৮ জুন বনধের ডাক দিয়েছে বেশ কিছু আদিবাসী সংগঠন। যার জেরে এখন দুটি ভাগে বিভক্ত আদিবাসীরা।
ঘটনার সূত্রপাত গত শুক্রবার রাতে। সেদিন ঝাড়গ্রাম শহরে ‘নবজোয়ার কর্মসূচি’র ‘রোড শো’ শেষ করে শালবনির উদ্দেশে যাচ্ছিল অভিষেকের কনভয়। অভিষেকের সেই যাত্রাপথে ৫ নম্বর রাজ্য সড়কের দু’ধারে তখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কুর্মিরা। তপশিলি উপজাতির স্বীকৃতির দাবিতে বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁদের আন্দোলন চালছে।
অভিযোগ, অভিষেকের কনভয় যাওয়ার সময় ‘চোর চোর’ বলে স্লোগান দেওয়া হয় কুর্মিদের জমায়েত থেকে। ওই কনভয়ে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহাও। অভিযোগ, তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়। এর জেরে গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে যায়। এছাড়া বাইকে থাকা তৃণমূল কর্মীদের ওপরও লাঠি, বাঁশ দিয়ে হামলা চালানো হয়।
বীরবাহার ওপর হামলার প্রতিবাদে সরব হয়েছে বেশ কয়েকটি আদিবাসী সংগঠন। শনিবার বাঁকুড়ার রাঢ় অ্যাকাডেমিতে একটি বৈঠক করেন ১৪টি আদিবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। সেখানেই তৈরি হয় যৌথ মঞ্চ। যার নাম দেওয়া হয় ‘ইউনাইটেড ফোরাম অফ অল আদিবাসী অর্গানাইজেশনস অফ ওয়েস্টবেঙ্গল’। বীরবাহাকে হেনস্তার প্রতিবাদে ওই মঞ্চের তরফে আগামী ৮ জুন ২৪ ঘণ্টা বাংলা বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে।
‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’, ‘ভারতীয় আদিবাসী ভূমিজ সমাজ’, ‘কোড়া সমাজ’, ‘শবর এবং মাহালি সমাজ’ এবং ‘সারা ভারত সাঁওতাল একক সংগঠন’ সহ কয়েকটি সংগঠন যৌথ মঞ্চে রয়েছে। মঞ্চের বক্তব্য, ‘আন্দোলন করার অধিকার সবার রয়েছে। কিন্তু এভাবে মারধর, হামলার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। বীরবাহা হাঁসদা আগে একজন আদিবাসী মহিলা। পরে তিনি মন্ত্রী। আদিবাসী মহিলার ওপর হামলার প্রতিবাদে আমরা বন্ধের ডাক দিয়েছি।’
যদিও হামলার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘কুর্মিরা একাজ করেনি। করেছে বিজেপি।’ মুখ্যমন্ত্রী ‘ক্লিনচিট’ দিলেও শনিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজেশ সহ ৪ জনকে। তার আগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ৪ জন। ধৃতদের সকলকেই রবিবার ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হয়েছিল। রাজেশ সহ ৮ জন জামিনের আবেদন করলেও তা খারিজ হয়ে যায়। সোমবার তাঁদের ফের আদালতে পেশ করা হবে।
এদিকে, রাজেশবাবু স্কুলশিক্ষক। তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের বেনাপুর হাইস্কুলে ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন। তাঁকে কোচবিহারের চামটা আদর্শ হাইস্কুলে বদলি করা হয়েছে। রাজেশকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তাঁকে বদলিরও প্রতিবাদ জানিয়েছেন কুর্মিরা। এনিয়ে রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় মিছিলও করেন সংগঠনের সদস্যরা।
রাজেশের বদলির নিন্দা করেছে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে, এই বদলি সম্পূর্ণ অনৈতিক, বেআইনি এবং প্রতিহিংসামূলক। রাজেশের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে ওই সংগঠন।
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বিজেপিতে (BJP) যোগ দিলেন রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীর…
রায়গঞ্জ: দেহ ব্যবসায় রাজি না হওয়ায় স্ত্রীর সারা শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালাল…
কালিয়াগঞ্জ: নেশায় বুঁদ হয়ে চার চাকার ছোট লরি রাস্তার মাঝে দাঁড় করিয়ে চালকের আসনে বসেই…
ফালাকাটা: পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হলেন আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের (Alipurduar University) উপাচার্য রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়। ফালাকাটার (Falakata)…
কুমারগঞ্জ: আজ থেকে প্রায় পাঁচ বছর আগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের বরাদ্দকৃত অর্থে প্রায় ৬ কিলোমিটার…
This website uses cookies.