সেনাউল হক, কালিয়াচক: জেলার চাষিদের রেশম গুটি বিক্রির ভরসা কালিয়াচকের কোকুন মার্কেট। কিন্তু সেই রেশম গুটি বিক্রি করতে আসার পথে জাতীয় সড়কে হয়রানির শিকার হচ্ছেন রেশম চাষিরা। চাষিদের গাড়ি আটকে কখনও ২০০, কখনও ৫০০ টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, টাকা না দিলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখা হচ্ছে গাড়ি। ফলে হয়রানির শিকার হচ্ছেন দুঃস্থ চাষিরা। তাঁরা সমস্যা সমাধানে জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ দাবি করছেন।
শুক্রবার কালিয়াচক কোকুন হাটে আসার পথে গাজোল থানা এলাকা কদুবাড়ি মোড়ে রেশম চাষিদের থেকে জোরপূর্বক সিভিক ভলান্টিয়াররা টাকা আদায় করে বলে অভিযোগ। টাকা না দিলে রেশম গুটি বোঝায় গাড়ি আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে। এরপর কালিয়াচকে আসার পরে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন রেশম চাষিরা। তাঁদের সাফ কথা, দুঃস্থ চাষিদের অতিরিক্ত টাকা চেয়ে হয়রানি করা বন্ধ হোক।
চাঁচলের চাষি মমতাজ আলম জানালেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। রেশম চাষ করে সংসার নির্বাহ করি। সামান্য লাভের জন্য চাঁচল থেকে কালিয়াচকে রেশম গুটি বিক্রি করতে আসি। কিন্তু আসার সময় গাজলের কদুবাড়ি মোড় সহ বেশ কয়েক জায়গায় গাড়ি আটকে দিয়ে টাকা আদায় করছে পুলিশ। টাকা না দিলে ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়ি আটকে রাখছে। টাকা না থাকলে বাড়ি থেকে আবার টাকা নিয়ে আসতে হচ্ছে। আমরা খুব বিপদে পড়েছি।’
চাঁচলের আরেক চাষি করিম শেখের অভিযোগ, ‘আমাদের গাড়ি আটকে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা জোরজবরদস্তি আদায় করছে পুলিশ। আমরা দুটো পয়সা লাভের জন্য কালিয়াচকের গুটি বিক্রি করতে আসি, কিন্তু রাস্তাতে যদি এরকম ভাবে হয়রানি করা হয়, তাহলে আমরা কী করব। জেলা প্রশাসনের কাছে আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে বন্ধ করা হোক।’
উল্লেখ্য, মালদার কালিয়াচক সহ চাঁচল ও হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় এই মরশুমে রেশম গুটির উৎপাদন হয়। জেলার মধ্যে রেশম গুটি বিক্রির হাট বসে থাকে কালিয়াচক কোকুন মার্কেটে। সোমবার ও শুক্রবার রেশম গুটি বিক্রি করা হয় এই মার্কেটে। তাই কালিয়াচক সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের চাষিরা কালিয়াচকে আসেন রেশম গুটি বিক্রি করতে। কিন্তু ছোট গাড়ি করে রেশম গুটি নিয়ে আসার সময় জাতীয় সড়কে গাড়ি আটকে পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়াররা জোরজুলুম করে। কারও কাছে ২০০ টাকা, কারও কাছে ৫০০ টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ।

