বাণীব্রত চক্রবর্তী, ময়নাগুড়ি: আড়ম্বর নেই, নেই থিমের প্যান্ডেল। তবু প্রতিবছর দূরদূরান্ত থেকে পেটকাটিতে শুধুমাত্র একবার মায়ের দর্শন করতে ছুটে আসে বহু মানুষ। আর মূর্তিও যে প্রতিবার নতুন করে আনা হয় সেরকম নয়। সেই বহু বছর আগে মাটি খুঁড়ে পাওয়া কষ্টিপাথরের মূর্তিই কালীরূপে পূজিত হয় সেখানে। মায়ের রূপই যেন নজর কাড়ে সকলের। মূর্তির চার হাতে রয়েছে শঙ্খ, চক্র, গদা ও পদ্ম। উপরে দু’দিকে রয়েছে হাতির শুঁড়। মূর্তির পেট অদ্ভুতভাবে কাটা। সেখানে রয়েছে কাঁকড়া বিছে। মূর্তির আদল দেখেই এলাকার নাম হয়েছে পেটকাটি। রীতিমতো মন্দির প্রতিষ্ঠা করে নিয়মিত পুজো হয় সেখানে। পুজো কমিটির সম্পাদক রতন রায় বলেন, ‘বহু বছর আগে এখানকার মানুষ মাটি খুঁড়তে গিয়ে কষ্টিপাথরের এই মূর্তি খুঁজে পায়। স্থায়ী পুরোহিত বাবলু শর্মাই পুজো করেন।’
আর কালীপুজোর কয়েকটা দিন তো বিশেষ আয়োজন থাকেই। সারা রাত ধরে পুজোর পর সকাল থেকে ভোগ বিতরণ করা হয়। ইতিমধ্যে পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। পুজো কমিটির সভাপতি সাধন চন্দ বলেন, ‘আড়ম্বর নেই। তবে ভক্তিভরে মায়ের পুজো করে। বহু মানুষ এখানে মায়ের দর্শন করতে আসেন। পুজোতে সকলে খুব সহযোগিতা করেন।’
ময়নাগুড়ি (Mainaguri) পুরসভার-১ নম্বর ওয়ার্ডের পেটকাটির কালীপুজো ঘিরে বাসিন্দাদের আলাদা আবেগ রয়েছে। পুজোর পাশাপাশি সেখানে দু’দিন মেলাও বসে। আর ওই পুজো ও মেলা পরিচালনার জন্য কমিটিও রয়েছে। মন্দিরের স্থায়ী কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৩১। এছাড়া ৩০ সদস্যের একটি পরিচালন কমিটিও রয়েছে। কমিটির সদস্যরা চাঁদা তোলা শুরু করে দিয়েছেন। মন্দির কমিটির সদস্য কানু রায় বলেন, ‘কম বাজেটের পুজো হলেও আন্তরিকতায় কোনও খামতি থাকে না।’ দেখতে দেখতে প্রায় ১০০ বছরেরও বেশি হয়ে গেল ওই পুজোর, বলছেন এলাকার প্রবীণ নাগরিক তথা জমিদাতা নরেন রায়। তাঁর কথায়, ‘আমিও ছোট থেকে এই পুজো দেখে আসছি।’ এবারও মন্দিরের সামনে ছোট করে প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে। এলাকার মহিলারাও পুজোর কাজে হাত লাগান। সমস্ত নিয়মনিষ্ঠা মেনেই পুজো হয় বলে জানিয়েছেন ওয়ার্ডের কাউন্সিলার রিম্পা রায়।