পিকাই দেবনাথ, কামাখ্যাগুড়ি: ৬৮তম ন্যাশনাল স্কুল গেমসে হ্যান্ডবলে বাংলার হয়ে কামাখ্যাগুড়ির (Kamakhyaguri) মনোজিৎ রায় প্রতিনিধিত্ব করবে। আগামী ১১ থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত পঞ্জাবের লুধিয়ানায় ন্যাশনাল হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশিপে অনূর্ধ্ব ১৯ বিভাগে সে অংশগ্রহণ করবে। মনোজিৎ কামাখ্যাগুড়ি হাইস্কুলের ছাত্র। সে দক্ষিণ নারারথলির বাসিন্দা। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের ছেলে মনোজিৎ। বাবা বিপ্লব রায় দিনমজুর। আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্যেও মনোজিৎ খেলা চালিয়ে যাচ্ছে। কামাখ্যাগুড়ি হাইস্কুলের মাঠে সে হ্যান্ডবল নিয়মিত প্র্যাকটিস করে। তার প্রশিক্ষক কিশোর মিঞ্জ ও রুপম রায়। তাঁরা ২০২০ সাল থেকে মনোজিৎকে বিনা পারিশ্রমিকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। প্রশিক্ষক কিশোর জানান, মনোজিৎ খেলাধুলোয় খুব ভালো। অধ্যবসায়ে ওর কোনও খামতি নেই। ভবিষ্যতে ও আরও অনেক বড় জায়গায় যাবে।
মনোজিতের কথায়, ‘পরিবারে আর্থিক অসচ্ছলতা থাকলেও বাবা, মা ও দাদা প্রতিনিয়ত খেলাধুলোয় উৎসাহ দেন। পাশাপাশি আমার দুই প্রশিক্ষক সবসময় আমাকে উৎসাহিত করেন। তবে ক্রিকেট ও ফুটবলের প্রতি যতটা দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়, হ্যান্ডবলে তুলনামূলকভাবে অনেকটা কম গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই সমাজের মূলধারার খেলা থেকে হ্যান্ডবল অনেকটা উপেক্ষিত।’ তাঁর সংযোজন, ‘প্রান্তিক এলাকায় সুযোগসুবিধার অভাব থাকে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনতে অনেক টাকা প্রয়োজন। অনেক সময় সরঞ্জামের অভাবে খেলা বন্ধ থাকে। খেলাধুলোয় সরকারি সুযোগসুবিধা পেলে উপকৃত হতাম। আর্থিক প্রতিকূলতার কারণে কতদিন খেলা চালিয়ে যেতে পারব জানি না।’ আগামীদিনে তিনি কামাখ্যাগুড়িতে ভালো খেলার মাঠ ও খেলাধুলোর উন্নত পরিকাঠামোর দাবি জানিয়েছেন। কামাখ্যাগুড়ির অনেক ছেলেমেয়ের প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও অর্থাভাবে খেলাাধুলো ছেড়ে দিচ্ছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে খেলাধুলোর প্রতি আগ্রহ বাড়ত। মনোজিতের বাবা বিপ্লব রায় বলেন, ‘আমি একজন সাধারণ দিনমজুর। আমার পক্ষে ওর খেলার খরচ জোগানো সম্ভব নয়। ছেলের খেলার প্রতি আগ্রহ আছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে খেলা চালিয়ে যেতে পারবে। সুযোগ পেলে আরও অনেক সাফল্য পাবে বলে আমরা আশাবাদী।’