মালবাজারঃ হতেই পারতো আরও একটা বড় রেল দুর্ঘটনা। চলে যেতেই পারত বেশ কয়েকটি প্রাণ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এমন কোনও পরিস্থিতিই তৈরি হয়নি। ট্রেন চালক তথা ট্রেনের অন্যান্য কর্মীদের তৎপরতায় বরাত জোর প্রাণে বেঁচে গেলেন বেশ কয়েকজন পথচারী। ঘটনাটি ঘটেছে চালসা-মালবাজার স্টেশনের মধ্যবর্তী একটি লেভেল ক্রসিংয়ে।
জানাগেছে শিয়ালদাগামী কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস চালসার দিক থেকে প্রচন্ড গতিতে মালবাজারের দিকে ছুটছিল। এই পথে চা বাগানের ভেতর দিয়ে বেশ কয়েকটি রেলগেট রয়েছে। এমনই একটি রেলপথ শোনগাছি চা বাগান এলাকায়। দ্রুত গতিতে ছুটে আসার ট্রেন থেকে হঠাৎ চালক দেখতে পান রেল গেট নামানো নেই। অথচ সিগন্যালে সবুজ বাতি অর্থাৎ থ্রু পাস। রেল গেটের গার্ড পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে না থাকায় চালকের সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। ইমার্জেন্সি ব্রেক কষে গাড়ি থামিয়ে দেন চালক। কিন্তু ততক্ষণে ট্রেনটি প্রায় রেলগেট ছুঁয়ে গেছে।
রেলগেট খোলা থাকায় সেই সময় প্রচুর বাইক, সাইকেল এবং ছোট গাড়ি পারাপার করছিল সেই লাইনের ওপর দিয়ে। হঠাৎ ট্রেনের হর্ণ এবং ব্রেকের শব্দে দুই পাশে দাঁড়িয়ে পড়েন পথচারীরা। ফলে বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। প্রত্যক্ষদর্শী আজমত আনসারী জানাচ্ছেন, ‘ট্রেন টানা হর্ন না দিলে আমরা রেললাইনে উঠেই পড়তাম।’
এদিন ট্রেন থামিয়ে নেমে আসেন চালক এবং অন্যান্য কর্মীরা। রেলের ম্যানুয়ালে বলা আছে এমন পরিস্থিতিতে খোঁজ নিতে হবে গেটম্যানের। অনেক সময় অসুস্থতা বা অন্য কোনও গুরুতর কারণে গেটম্যান সিগন্যাল না দিলে এভাবেই সেই রেলকর্মীর খোঁজ নেন ট্রেনের চালক ও গার্ড। কিন্তু গেটম্যানের ঘরে ঢুকতেই অবাক সবাই। বহাল তবিয়তেই রয়েছেন তিনি। তড়িঘড়ি নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চাইতে থাকেন এই রেলকর্মী। কিন্তু ততক্ষণে খবর পৌঁছে গেছে স্টেশন পর্যন্ত।
সূত্রের খবর অভিযুক্ত রেলকর্মী জানিয়েছেন অন্যমনস্কতার জন্যই এই ভুলটি হয়েছে তাঁর। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রেল দপ্তর। তবে দপ্তরের তরফে মুখ খুলতে রাজি হননি কেউ।