সামসী: চেন্নাই গিয়ে বাড়তি রোজগার করে ইদের আগেই নতুন জামাকাপড় কেনার জন্য টাকা পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু অভিশপ্ত করমণ্ডল দুর্ঘটনা কেড়ে নিল মালদার মালতীপুরের মাসরেকুল আলমের প্রাণ। ময়নাতদন্তের পর তার কফিনবন্দি দেহ নিজের গ্রামে ফেরে। রাতেই গ্রামবাসীদের সামনে কবরস্থ করা হয় মাসরেকুলকে। এদিন মৃত মাসরেকুলের অসহায় পরিবারের হাতে রাজ্য সরকারের তরফে পাঁচ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ও তজমুল হোসেন। পস্থিত ছিলেন মালতীপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বকসি,জেলা পরিষদের সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন।
পরিবারের দাবি, এলাকায় সেভাবে কাজ না থাকায় চেন্নাই গিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা করে মাসরেকুল। এই প্রথম পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে বাইরে গিয়ে কাজ করার কথা ভেবেছিল সে। সেইমতো অভিশপ্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসে চেপে বসে। দুর্ঘটনার খবর জানাজানি হতেই চরম উৎকন্ঠা তৈরি হয় পরিবারে। শনিবার ভোর ৫ টা নাগাদ মাশরেকুলের মৃত্যুর খবর জানতে পারে পরিবারের লোকজন। বাবা জিয়াউল হক পেশায় দিন মজুর। মা রেহেনা বিবি সাধারণ গৃহবধূ। কয়েক শতক ভিটে বাড়িই সম্বল। সেখানে ভাঙাচোরা ঘরেই কোনরকম বসবাস তাদের। মাসরেকুলরা দুই ভাই ও এক বোন। বাড়ির বড়ো সন্তান সে। বাড়িতে রয়েছে স্ত্রী রুকসানা খাতুন ও দুই নাবালক সন্তান। স্ত্রী জানান, চেন্নাই গিয়ে ইনকাম করে ঈদের আগেই টাকা পাঠানোর কথা বলেছিল স্বামী। পাঠানো টাকায় ছেলে মেয়েদের জন্য নতুন ঈদের জামা কাপড় ও কুরবানির পশু কেনার কথা ছিল।কিন্তু ওসব আর হল না। ছেলের মৃত্যুর খবরে ভেঙে পড়েছেন বাবাও। তিনি জানান, আগে দিন মজুরি করে সংসার চলত। বয়স হওয়ায় এখন আর খাটতে পারেন না। বড়ো ছেলের আয়েই সংসার চলত। তবে এখন কী হবে তা ভাবতে পারছেন না তিনি।