করণদিঘি: উমা বিদায়ের পরে আরও এক উমাকে বরণের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে করণদিঘি ব্লকের সিঙ্গারদহ গ্রাম। পুজোর বয়স প্রায় দু’শো বছর। শতাব্দীপ্রাচীন পুজো হলেও রীতিনীতিতে এতটুকু বদল আসেনি। প্রথা মেনে বিজয়া দশমীর পরে প্রথম মঙ্গলবার শুরু হয় পুজো। বিসর্জন হয় শনিবার। দুর্গাপুজোর বিধি মেনে পূজিতা হন সোনামতি কুম্ভরানি। প্রথম দিনেই দেওয়া হয় পশুবলি। মূলত রাজবংশী সম্প্রদায় এই পুজো করে থাকেন।
কথিত আছে পালবংশের কোনও এক বংশধর করণদিঘির সিঙ্গারদহে বসবাস করতেন। পাল বংশের বধূ সোনামতি দেবীদূর্গাকে দর্শনের জন্য ঘরে সাজগোজ করছিলেন। স্থানীয় মহিলারা বাইরে তাঁকে দেখার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অনেকক্ষণ দেখা না পাওয়ায় তারা অধীর হয়ে ওঠেন। শ্বশুরের পরামর্শে তারা ঘরে ঢুকে সোনামতিকে দেবী দূর্গারূপে দেখতে পান। তারপরে রাজপরিবারের ঘোষণা মতো দশমীর পরে প্রথম মঙ্গলবার শুরু হয় সোনামতি কুম্ভরানির পুজো।
পুজো কমিটির সম্পাদক জয়ন্ত সিনহা জানান, ‘পুজো উপলক্ষ্যে মন্দিরে পুণ্যার্থীদের ভিড় হবে আশাতীত। উত্তর দিনাজপুর জেলা ছাড়াও পাশ্ববর্তী দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি থেকে অসংখ্য রাজবংশী মানুষ এই পুজো দেখতে আসেন। যাঁরা মানত করেন, তাঁরা পুজোর প্রথম দিনই পশুবলি দেন। সরকারি অনুদানও নেওয়া হয়। এবারে পুজোর উদ্বোধন করবেন উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি পম্পা পাল ও বিধায়ক গৌতম পালও।’
পুজো কমিটির সভাপতি যদুনন্দন সিংহ জানান, ‘মায়ের নামে দশ একর জমি আছে। এই জমির ফসল বিক্রি করে যে অর্থ পাওয়া যায় তা দিয়ে পুজোর আয়োজন হয়। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, মায়ের আশীর্বাদেই গ্রামকে কোনও বিপদ ছুঁতেও পারে না।’