উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ কসবার ধর্ষণের ঘটনায় এবার গ্রেপ্তার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ৫৫ বছর বয়সি নিরাপত্তারক্ষী। এই নিরাপত্তারক্ষীর ঘরেই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগপত্রে লিখেছেন খোদ নির্যাতিতা ছাত্রী। শুক্রবার রাতে ওই রক্ষীকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে কসবা থানার পুলিশ। অভিযোগ, তাঁর বয়ানে অসঙ্গতি থাকায় গ্রেপ্তার করা হয় সেদিনের অন্যতম সাক্ষীকে। নির্যাতিতা অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, ঘটনার সময়ে রক্ষী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তিনি ছিলেন ‘অসহায় সাক্ষী’। তাই নির্যাতিতাকে কোনও সাহায্য করতে পারেননি।
সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে ধর্ষণের ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই অন্যতম অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র সহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তার করা হয় তালবাগান ক্রসিংয়ের সামনে থেকে। ধৃত মনোজিৎ তৃণমূলের এক প্রভাবশালী নেতা। সেই সঙ্গে তিনি এই আইন কলেজের অস্থায়ী পদে চাকরিও করতেন। অভিযুক্ত বাকি দুই জনও তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি। নির্যাতিতা নিজেও টিএমসিপির সদস্য ছিলেন। নির্যাতিতা অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, শাসকদলের ছাত্র পরিষদের নেতা হওয়ায় অভিযুক্তদের দাপট ছিল কলেজে। তিনি রক্ষীর কাছেও হেল্প চেয়েছিলেন। কিন্তু মূল অভিযুক্ত এতটাই প্রভাবশালী যে রক্ষীও ছিলেন ‘অসহায়’। যেহেতু ধর্ষণের ঘটনাটি কলেজের গার্ডরুমে ঘটেছে, সেই কারণেই শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিরাপত্তারক্ষীকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু অসঙ্গতি থাকায় পুলিশ এদিন রাতেই গ্রেপ্তার করে তাঁকে। যদিও রক্ষীর দাবি, তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৫ জুন, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০ মিনিটের মধ্যে কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। নির্যাতিতা অভিযোগপত্রে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করেছেন ‘জে’, ‘এম’, এবং ‘পি’ নামে। নির্যাতিতা জানিয়েছেন, প্রথমে ইউনিয়ন রুমের ভিতর তাঁর সঙ্গে ধস্তাধস্তি করা হয়। পরে রক্ষীর ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন মনোজিৎ। বাইরে পাহারায় ছিলেন বাকি দু’জন। কলেজের মেন গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ছাত্রীকে বেরোতে দেওয়া হয়নি। রক্ষীর কাছে তিনি সাহায্য চেয়েও পাননি। মূল অভিযুক্ত শাসকদলের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় দাপট ছিল কলেজে। সেই কারণেই রক্ষীও ছিলেন ‘অসহায়’। অভিযোগ, ধর্ষণের কথা পুলিশকে জানালে তাঁর প্রেমিককে খুন করিয়ে দেওয়ার এবং বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে নির্যাতিতাকে। ইউনিয়ন রুমে হকি স্টিক দিয়ে নির্যাতিতাকে মারধরের চেষ্টাও করা হয়েছিল।