চন্দ্রনারায়ণ সাহা, রায়গঞ্জ: কৌন বনেগা ক্রোড়পতির হট সিটে বসে ২৫ লক্ষ টাকার চেক পেলেন মাসে ৩ হাজার টাকা উপার্জন করা মিন্টু সরকার। তিনি চান এই টাকা বাবার চিকিৎসার জন্য বন্ধক রাখা জমি উদ্ধার করতে। আজ বাবা নেই। তিনি থাকলে দেখতে পারতেন, জমি ফিরে এসেছে পরিবারের হাতে।
শনিবার রায়গঞ্জ থানার জগদীশপুরের জাউনিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, পুরো পরিবার ভাসছে আনন্দ উচ্ছ্বাসে। ভিড় জমিয়েছেন পাড়াপড়শিরাও। সকলেই মুখে একটাই কথা, যদি শিবু সরকার আজ বেঁচে থাকতেন।
শিবু সরকার মন্টুর বাবা। ছেলে আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও গতবছর ১২ জানুয়ারি বাবাকে হারিয়েছেন মন্টুবাবু। সেই সময় কিভাবে সংসার চালাবেন তা বুঝতে না পেরে ছোট একটা দোকান খোলেন। সেই দোকান থেকে উপার্জন হত মাসে ৩ হাজার টাকা। তা দিয়ে মা দেখন সরকারের চিকিৎসার পাশাপাশি সংসার চালানোর দায়িত্ব ঘাড়ে এসে পড়ে। মন্টুর কথায়, ‘সময় কাটাতে মোবাইলে দেখতাম কৌন বনেগা ক্রোড়পতি। সেখান থেকেই শুরু হয় স্বপ্নের উড়ান।’
কিভাবে কেবিসির মঞ্চে পৌঁছালেন, জানতে চাইলে মিন্টুবাবুর উত্তর, মে মাস নাগাদ অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন করলে প্রাথমিক নির্বাচনের জন্য ফোনে ইন্টারভিউ দেন তিনি। তারপর দিল্লিতে একটি লিখিত পরীক্ষা হয়। সেটাতেও সফল হন। নভেম্বর মাসের ১৩ তারিখের টিকিট পাঠায় কেবিসি কর্তৃপক্ষ। ১৮ নভেম্বর হট সিটে যখন অমিতাভ বচ্চনের সামনে বসে খেলা শুরু করেন, তখন তিনি নার্ভাস হয়ে পড়েন।
বছর ছাব্বিশের মিন্টুর কথায়, ‘এই টাকাতেই আমি আমার সংসারের হাল ফিরিয়ে আনতে পারব। এই টাকা দিয়ে জমি উদ্ধার করে আবারও কৃষি কাজ করব। বাকি টাকা মায়ের চিকিৎসা করানোর কাজে লাগাব।’
বড় শহর গুলোতে যখন একেরপর এক বৃদ্ধাশ্রম গড়ে উঠছে, সন্তনেরা বৃদ্ধ বাবা-মাকে সেই বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসছেন, তখন এক অনন্য নজির গড়ল রায়গঞ্জের এই তরুণ।