কলকাতা নাইট রাইডার্স : ১৭৭/৬ (২০ ওভার)
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ : ১২৩/৮ (২০ ওভার)
পুনে : হাসছিলেন শ্রেয়স আইয়ার। শুরুতে হাসিতে ছিল না প্রাণ। শুষ্কং কাষ্ঠং হাসিটা বদলে দিলেন আন্দ্রে রাসেল। তাঁর (২২/৩) সঙ্গে ব্যাট হাতে বাইশ গজের ধারে মজা করছিলেন নীতিশ রানা। টিভির পর্দায় দেখে দুইজনের কাউকেই শুরুতে মনে হচ্ছিল না মুডটা ভালো বলে। ম্যাচ গড়ানোর সঙ্গে বদলে গেল ছবিটা।
কথায় বলে মেজাজটাই আসল রাজা। আর এখানেই সমস্যা কলকাতা নাইট রাইডার্সের। ওপেনাররা ভরসা দিতে পারেন না। মিডলঅর্ডার নিয়ম করে ব্যর্থ হয়। ব্যাটিং অর্ডারে ধারাবাহিকতা বলে কোনও শব্দ খুঁজে পাওয়া যায় না। নিয়ম করে জয় বাবা দ্রে রাস (আইপিএলে আজ ২০০০ রান ক্লাবের সদস্য হলেন) মন্ত্র জপ করতে হয়। ব্যাট হাতে দলকে ভরসা দিয়ে বল হাতে জয় নিশ্চিত করতে হয় তাঁকেই। ম্যাচের সেরা ক্যারিবিয়ান কিং তো সেটাই চান!
চেনা ছবি। পরিচিত চিত্রনাট্য। পুনের এমসিএ স্টেডিয়ামের হালকা ঘাসে মোড়া মন্থর বাইশ গজে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে চাপে ছিল কেকেআর। মুম্বইয়ে বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে ভেঙ্কটেশ আইয়ার (৭) ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আজ মার্কো জানসেনের (৩০/১) পেসে ঠকে বোল্ড হলেন। অভিজ্ঞ আজিঙ্কা রাহানে (২৮) ছন্দের খোঁজে মরিয়া ছিলেন। সফল হননি। নীতিশ (১৬ বলে ২৬) তিন নম্বরে নেমে দলের রান বাড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। একই ওভারে নীতিশ-রাহানেকে ফিরিয়ে নাইটদের ধাক্কা দিয়েছিলেন উমরান মালিক (৩৩/৩)।
উমরানের গতির আগুন সামলে নাইটদের মসিহা হিসেবে হাজির হলেন রাসেল (২৮ বলে অপরাজিত ৪৯)। সঙ্গে পেলেন স্যাম বিলিংসকে (২৯ বলে ৩৪)। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৪৪ বলে ৬৩ রান যোগ করে নির্ধারিত ২০ ওভারে কেকেআরের রান ১৭৭/৬-এর নিরাপদ স্কোরে পৌঁছে দিলেন তাঁরা। শেষ ওভারে ২০ রান করে রাসেল প্রমাণ করলেন, তিনিই বাজিগর। জবাবে রান তাড়া করতে নেমে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে ১২৩/৮-এ থেমে গেল হায়দরাবাদ। অলরাউন্ড রাসেলে ৫৪ রানে জিতে প্লে-অফ স্বপ্ন বেঁচে থাকল নাইটদের। ১৩ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় ছয় নম্বরে উঠে এল কেকেআর।
এমসিএ স্টেডিয়ামের বাইশ গজ স্ট্রোক প্লে-র জন্য আদর্শ ছিল না। বল পড়ে থমকে ব্যাটে আসছিল। পঞ্চদশ আইপিএলের বেশিরভাগ ম্যাচেই তো এমন ঘটনা দেখা গিয়েছে। তাছাড়া থঙ্গরাসু নটরাজন (৪৩/১), উমরান, ভুবনেশ্বর কুমারদের (২৭/১) বৈচিত্র, পেশাদারি দক্ষতা ও শৃঙ্খলার বোলিংয়ে সামনে নাইট ব্যাটারদের দক্ষতার অভাব নজরে এল বারবার। তার মধ্যে নটরাজনের ইয়র্কারে এলবিডবলিউ হয়ে সময় পার করে ডিআরএস নিতে গিয়ে বিতর্কে জড়ালেন রিঙ্কু সিং (৫)।
জিতলে সুযোগ থাকবে, হারলেই বিদায়। এমন পরিস্থিতিতে নাইটদের চ্যালেঞ্জের সামনে কেন উইলিয়ামসন (৯), রাহুল ত্রিপাঠী (৯), এইডেন মার্করামরা (২৫ বলে ৩২) চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন। একমাত্র অভিষেক শর্মা (২৮ বলে ৪৩) পালটা লড়াইয়ে চেষ্টা করেছিলেন। সুনীল নারায়ণ (৩৪/১), আচমকা ছন্দ পাওয়া বরুণ চক্রবর্তী (২৫/১), উমেশ যাদব (১৯/১), টিম সাউদিদের (২৩/২) দক্ষতার সামনে নিজামের শহরের ব্যাটাররা তলিয়ে গেলেন প্লে-অফের লড়াইয়ে|