কলকাতাঃ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এখন ইতিহাস। দুবাইয়ে টিম ইন্ডিয়ার ‘চাক দে’র আমেজ এখনও রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট সংসারে।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের অন্দরমহলে সেই আবহ ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছেন বরুণ চক্রবর্তী ও হর্ষিত রানা। দুজনই দুবাইয়ে রোহিত শর্মার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী দলে ছিলেন। বরুণ তিন ম্যাচে নয় উইকেট নিয়ে ভারতের খেতাব জয়ের পথ মসৃণ করেছিলেন। হর্ষিতও পিছিয়ে ছিলেন না। ভারতীয় দলের সাফল্যে তাঁরও অবদান রয়েছে। এহেন বরুণ-হর্ষিত চলতি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে তাঁদের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সকে নয়া অক্সিজেন দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন। কীভাবে?
নাইটদের সমাজমাধ্যমে আজ দুপুরের দিকে একটি ভিডিও পোস্ট হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, কলকাতা থেকে গুয়াহাটি যাওয়ার পথে বিমানের ভিতরেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন হর্ষিত-বরুণ। কীভাবে খেতাব জয়ের সাফল্য ধরে রাখার কথা ভাবছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে হর্ষিত তাঁর মোবাইলের স্ক্রিন সেভারে ট্রফি হাতে নিজের ছবি দেখিয়েছেন। বলেছেন, ‘এই ছবিটা আমার জীবনে চিরকালীন হতে চলেছে।’ হর্ষিতকে ছাপিয়ে এককদম এগিয়ে নাইটদের রহস্য স্পিনার বরুণ তাঁর মোবাইলের স্ক্রিন সেভারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী পুরো দলের ছবি দেখিয়ে বলেছেন, ‘এমন স্মৃতি কখনও ভোলা যায় নাকি। যতদিন মস্তিষ্ক সচল থাকবে, দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের স্মৃতিও থেকে যাবে।’
গত সন্ধ্যায় গুয়াহাটি পৌঁছানোর পর বিহুনৃত্যের মাধ্যমে কেকেআরের পুরো দলকে অভ্যর্থনা করা হয়েছিল। হোটেলে পৌঁছানোর পর আজিঙ্কা রাহানেরা সানরাইজার্স হায়দরাবাদ-রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচের দিকেও নজর রেখেছিলেন। ঈশান কিষানদের বিরুদ্ধে রাজস্থান জিততে না পারলেও দল হিসেবে তাঁরাও যে পিছিয়ে নেই, তার প্রমাণ দিয়েছেন সঞ্জু স্যামসন, শিমরন হেটমেয়াররা। বুধবার গুয়াহাটির বর্ষাপাড়ার ক্রিকেট মাঠে গতরাতের ব্যাটিং তাণ্ডব ধরে রাখার ব্যাপারে প্রবল আশাবাদী রাজস্থান শিবির। আজ সন্ধ্যায় হায়দরাবাদ থেকে গুয়াহাটিতে পৌঁছেও গিয়েছেন সঞ্জুরা। রাজস্থানের ব্যাটিং আগ্রাসন নিয়েও নাইটদের অন্দরমহলে রয়েছে চাপ। তাছাড়া ঘরের মাঠে প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচে দলের মিডল অর্ডার ব্যাটিং যেভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছিল, সেটাও উদ্বেগে রাখছে কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্টকে।
এমন উদ্বেগ কাটানোর লক্ষ্যেই আসরে নেমেছেন হর্ষিত-বরুণ। তাঁরা সতীর্থদের সঙ্গে দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার পাশে দলকে আগামীর লক্ষ্যে চাঙ্গা করতেও নেমে পড়েছেন। রাতের দিকে গুয়াহাটি থেকে কেকেআরের একটি প্রভাবশালী সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বুধবারের রাজস্থান ম্যাচের আগে একটু বেশিই সতর্ক হয়ে রয়েছেন কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত, মেন্টর ডোয়েন ব্রাভোরা। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ম্যাচের ভুলের পুনরাবত্তি যেন ফের না ঘটে, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনাও হয়েছে। সঙ্গে গুয়াহাটিতে আজ সন্ধ্যার অনুশীলনে বোলিং কোচ ভরত অরুণ দলের বোলারদের নিয়েও আলাদাভাবে দীর্ঘসময় ক্লাস করেছেন। কুড়ির ক্রিকেটে আদর্শ লেংথ কী হতে পারে, তা নিয়েও চলেছে চর্চা।
নাইট সংসারে ভারতীয় দলের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আবহ ফেরানোর যে উদ্যোগ নিয়েছেন বরুণ-হর্ষিতরা, বাস্তবে সেটা কতটা কাজে দেয়, তাই এখন দেখার।