সিডনি: বিরাট কোহলি, জসপ্রীত বুমরাহর কঠোর শাস্তি প্রাপ্য। সিরিজের শেষ দুই টেস্টে যেভাবে তরুণ স্যাম কনস্টাসকে আক্রমণ করেছেন দুই সিনিয়ার ভারতীয় ক্রিকেটার, তা কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমনই দাবি করেছেন কনস্টাসের আঞ্চলিক দল নিউ সাউথ ওয়েলসের কোচ গ্রেগ শেপার্ড। যুক্তি, সিডনিতে উসমান খোয়াজাকে আউটের পর কনস্টাসের দিকে লক্ষ্য করে বুমরাহর আচরণ দৃষ্টিকটু, গ্রহণযোগ্য নয়।
ঘরোয়া দলের কোচের সেই দাবিকে যদিও খারিজ করে দিয়েছেন স্বয়ং কনস্টাসই। অস্ট্রেলিয়ার বছর উনিশের তরুণ ওপেনার রাখঢাক না রেখেই বলে দিচ্ছেন, দোষটা তঁারই। দিনের একেবারে শেষবেলায় বাড়তি ওভার খেলা এড়াতে সময় নষ্ট করছিলেন উসমান খোয়াজা। যা মানতে পারেননি বুমরাহ। কথা বলতে দেখা যায় খোয়াজার সঙ্গে। কিন্তু তার মাঝেই ঢুকে পড়েন কনস্টাস। বুমরাহর সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়ান। শেষপর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হয় আম্পায়ারদেরও। খোয়াজা-শিকারে শেষ হাসি হাসেন অবশ্য বুমরাহ এবং তারপর কনস্টাসকে লক্ষ্য করে আগ্রাসী উচ্ছ্বাস।
বিতর্কিত ঘটনা নিয়ে কনস্টাসের অকপট স্বীকারোক্তি, ‘উজি (উসমান খোয়াজা) কিছুটা সময় নষ্টের চেষ্টা করছিল। ভুলটা আমারই। কিন্তু এরকম ঘটেই থাকে। এটাই ক্রিকেট। দুর্ভাগ্য, উজি আউট হয়ে যায়। শেষপর্যন্ত কৃতিত্বটা অবশ্য বুমরাহর প্রাপ্য। উইকেট তুলে নিয়েই ফিরেছিল। তবে দল হিসেবে আমাদের পারফরমেন্স নিঃসন্দেহে দুর্দান্ত ছিল।’
অতি-আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে অভিষেক ইনিংসেই চমকে দেন। রিভার্স স্কুপে গ্যালারিতেও ফেলেন বুমরাহকে। গত চার বছরে টেস্টে যে সাহস দেখাতে পারেননি দ্বিতীয় কোনও ব্যাটার। বিস্ফোরক শুরুতে সবাইকে চমকে দেওয়া ইনিংস নিয়ে বলেছেন, ‘জানি না, মাঠে পা রাখার পর কী হয়েছিল। শুধু চেষ্টা করেছি নিজের সেরাটা দিতে। বুঝতে পারছি, যা প্রতিপক্ষকে কিছুটা ধাক্কা দিয়েছিল।’
মেলবোর্নে প্রায় ৯০ হাজার দর্শক। বক্সিং ডে টেস্ট। বুমরাহর নতুন বল সামলানোর চ্যালেঞ্জ। প্রতিপক্ষ দলে নিজের ক্রিকেট আদর্শ কোহলি। কিছুটা নার্ভাস থাকলেও নিজেকে শান্ত রেখে বুমরাহর তৈরি চক্রব্যূহ ভেঙে গুড়িয়ে দেন আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে। কনস্টাস বলেছেন, ‘মাঠভর্তি দর্শক। উজিও বলছিল, আমার ব্যাটিং ওরও রক্তচাপ বাড়াচ্ছিল। উত্তেজনায় ফুটছিল। তবে আমার মধ্যে উত্তেজনা কাজ করেনি। অবশ্য অভিষেক ভালোভাবেই হয়েছে, দুই ম্যাচেই জয়ী।’
কনস্টাসের ওপেনিং পার্টনার উসমান খোয়াজা মেনে নেন, সিরিজে বুমরাহ-ফোবিয়ার শিকার। সিরিজের আগে সাত ইনিংসে বুমরাহকে একবারও উইকেট দেননি। আত্মবিশ্বাস নিয়ে সিরিজ শুরু করেন। যদিও সিরিজ শেষে ছবিটা সম্পূর্ণ আলাদা। ৬ বারই বুমরাহর শিকার। খোয়াজার কথায়, ‘সবাই জিজ্ঞাসা করছিল, কী হচ্ছে? সত্যি কথা বলতে, আমি বুমরাহ-ফোবিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলাম। নির্ণায়ক ইনিংসে ওর চোট দুর্ভাগ্যজনক। তবে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, এই পিচে ওকে খেলতে হয়নি। যখন দেখি বুমরাহ নেই, বুঝে যাই আমাদের সামনে বড় সুযোগ। নিঃসন্দেহে যাদের বিরুদ্ধে খেলেছি, তাদের মধ্যে সবথেকে কঠিন বোলার। যখনই বল হাতে পেয়েছে, মনে হয়েছে উইকেট তুলে নেবে।’