উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ কুড়মিদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জের। বুধবার খড়গপুরের দিলীপ ঘোষের বাংলোতে হামলা চালাল কুড়মিরা। তাঁরা বাংলো ভাঙচুর করে বলেও অভিযোগ। দিলীপ ঘোষকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও জানান কুড়মিরা। অবিলম্বে ক্ষমা না চাইলে রাজ্যের প্রত্যেকটি থানায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতির বিরুদ্ধে এফআইআর করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কুড়মিরা। যদিও কুড়মিদের হুঁশিয়ারিতে পাত্তা দিতে নারাজ দিলীপ ঘোষ। তিনি বর্তমানে দিল্লিতে রয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৪ মে। কুড়মি সম্প্রদায়ের আন্দোলনে ধোঁয়া দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সম্প্রতি বাতাসে রটে যায়, কুড়মি আন্দোলনে নাকি চাল–ডাল দিলীপ ঘোষ দিয়েছেন। এই কথা উঠতেই কুড়মিদের বক্তব্য, দিলীপ ঘোষ কাকে চাল–ডাল দিয়েছে তা জানাক, না হলে আগামী দিনে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হবে। সেদিন তাঁকে রাস্তার উপর তাঁকে ঘেরাও করে রাখা হয়। বেগতিক দেখে গাড়ি থেকে নেমে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে, নানান প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোনওক্রমে বেড়িয়ে আসেন দিলীপ ঘোষ।
এখানেই শেষ নয়। গত ১৫ মে সোমবার সকালে খড়গপুরে চা চক্রে যোগ দিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন “ওরা (কুড়মিরা) যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে সব কাপড় খুলে দেব আমি। দিলীপ ঘোষের পিছনে যেন লাগতে না আসে। হিম্মত থাকলে শ্রীকান্ত মাহাতোকে তারা রিজাইন করাক। যত মাহাতো এমপি আছে, এমএলএ আছে রিজাইন করাক। এই মন্তব্যের পরপরই দিলীপ ঘোষকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কুড়মি সমাজ।
দিলীপ ঘোষের এই আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে আজ বিজেপই নেতার খড়গপুরের বাংলোতে হামলা চালায় কুড়মিরা। এদিন সকালে খড়গপুরে দিলীপ ঘোষের রেলওয়ে বাংলোর সামনে জমায়েত হন। এরপর বিজেপি নেতার বাড়ির গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন তাঁরা। শুধু তাই নয়, বাংলোর বাইরে বেশ কিছু জিনিসও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর যখন পুলিস যখন বিক্ষোভকারীদের বাংলোর বাইরে বের করে দেয়, তখন রাস্তা আটকে শুরু হয় বিক্ষোভ।
এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে কুড়মি নেতা অজিত মাহাতো বলেন, ‘কুড়মি জাতির কোনও একজন বা দু’জন ব্যক্তি চুরি করতে পারে, ধোকা দিতে পারে। কিন্তু কুড়মি জাতির কথা কেন বলল? যাঁরা করেছে, তার বিরুদ্ধে মুখোশ খুলুক। আমাদের কিছু বলার নেই। কুড়মি জাতি স্বভিমানে আঘাত। আমরা বলছি, প্রকাশ্যেই ক্ষমা চাইতে হবে’।
যদিও কুড়মিদের আন্দোলনকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ দিলীপ ঘোষ। তৃণমূল নেতাদের উসকানিতে কয়েকজন মদ্যপ হামলা চালিয়েছে বলেই পালটা কটাক্ষ করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি। দিলীপ ঘোষকে পালটা কটাক্ষ করেন কুণাল ঘোষ। ভাঙচুরের সমালোচনা করেও কুণালের দাবি, দিলীপ ঘোষের প্ররোচনামূলক মন্তব্যের জেরে কুড়মিরা এই পদক্ষেপ করেছে। উসকানিমূলক মন্তব্যের জেরে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে পুলিশেরই দিলীপকে আগে গ্রেপ্তার করা উচিত ছিল বলেই মনে করেন তৃণমূল মুখপাত্র।