শিলিগুড়ি: বরফের সাদায় ঢেকে গিয়েছে চারিপাশ।যতদুর চোখ যাচ্ছে শুধু বরফ আর বরফ। নতুন দফার তুষারপাতে বরফে মোড়া উত্তর সিকিমের চিত্রটা এখন এমনই। আর এমন পরিস্থিতিতে লাচুংয়ের পর এবার পর্যটকদের জন্য লাচেন যাওয়ার পথ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সিকিম প্রশাসন। মংগন জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে সোমবার এক নির্দেশিকা জারি করে লাচেন ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, গত বছর ৪ অক্টোবর সাউথ লোনাক লেক বিপর্যয়ের জেরে উত্তর সিকিমের আরও কিছু জায়গার পাশাপাশি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল লাচেন। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল এতদিন। তবে লাচেন খুলে দেওয়া হলেও পর্যটক প্রবেশের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে মংগনের জেলাশাসক অনন্ত জৈনের বক্তব্য, “পর্যটকদের নিরাপত্তার দিকে নজর রেখে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চুংথাং-লাচেন রোডে নিয়মিত মেরামতির কাজ করা হবে।”
উল্লেখ্য, লাচুং থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ার সময়ই মংগন জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে ১০ ডিসেম্বর লাচেন খুলে দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল।আর প্রত্যাশিত ভাবেই পর্যটন মহলকে স্বস্তি দিয়ে মঙ্গলবার থেকে খুলে যাচ্ছে লাচেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ৬টা থেকে ৮টা এবং দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত চুংথাং-লাচেন রোডে যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। গাড়িগুলি চলাচল করবে মুনশিথাং হয়ে। তবে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে কেবল ফোর হুইলার (ফোর বাই ফোর) জাতীয় গাড়িকে। প্রাথমিক ভাবে মোটরবাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাস্তাটি মেরামত করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
প্রত্যাশিত হলেও প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে খুশি পাহাড়-সমতলের পর্যটন মহল। সামনেই রয়েছে বড়দিন। প্রতি বছরই বড়দিনকে কেন্দ্র করে দার্জিলিংয়ের পাশাপাশি সিকিমে বেড়াতে আসেন পর্যটকরা। তুষারপাতের কারণে পর্যটকদের একটা বড় অংশ বেছে নেন উত্তর সিকিম। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সোমবার লাচুং, লাচেন, ইয়ুমথাং সহ উত্তর সিকিমের একাধিক জায়গায় তুষারপাত হয়েছে। এদিকে, ক্রমশই পর্যটতদের সংখ্যা বাড়ছে লাচুংয়ে। রবিবার লাচুংয়ে পৌঁছান ৬৫৪ জন পর্যটক। যার মধ্যে দেশীয় পর্যটকের সংখ্যা ৬০৮ জন। লাচেন খুলে যাওয়ার পর পর্যটকদের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন পাহাড়-সমতলের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।