Land grab case | নজরে সেচ ও পুলিশ কর্তারা, গুটিয়ে জমি মাফিয়ারা

রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: ‘ডাবগ্রামে আমাদের জেলা সভাপতিকেও (পড়তে হবে ব্লক সভাপতি) অ্যারেস্ট করিয়ে দিয়েছি।’ মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এমন কথা শোনার পর থেকেই আতঙ্কে গুটিয়ে গিয়েছেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির একাধিক দাপুটে নেতা। নেতরা গুটিয়ে যেতেই গা-ঢাকা দিয়েছে তাঁদের অনুগত জমি মাফিয়ারা। আর যে এলাকায় সবচেয়ে বেশি সরকারি জমি দখল (Land grab case) হয়েছে সেই ফুলবাড়ি, পোড়াঝাড় এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস (tmc) নেতাদের এদিন এলাকায় দেখা যায়নি। কেউ বাড়ি থেকে বের হননি, তো কেউ এলাকাতেই ছিলেন না।

সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) তদন্ত শুরু করেছেন। গত পাঁচ বছরে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি, মাটিগাড়া এলাকায় কত জমি দখল হয়েছে, কমিশনারেটে কত অভিযোগ জমা পড়েছে, কতগুলির ওপর কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, ওই সময় কোন থানায় কোন পুলিশকর্মীরা পোস্টিং ছিলেন, কোন নেতাদের নাম রয়েছে সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের কাছে এই তথ্যগুলি চাওয়া হয়েছে। এরপরেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। সেইমতো কাজও শুরু হয়েছে। তালিকায় শাসকদলের প্রাক্তন এবং বর্তমান পঞ্চায়েত সদস্যদের পাশাপাশি একাধিক নেতার নাম রয়েছে। নাম রয়েছে ফুলবাড়ির স্যাটেলাইট টাউনশিপ এলাকার এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার। এই বিষয়ে জানতে শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) তন্ময় সরকারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় বক্তব্য মেলেনি।

ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভা এলাকায় আশিঘর, ইস্টার্ন বাইপাস, ফুলবাড়ি, পোড়াঝাড় এলাকায় সব চাইতে বেশি জমির কারবার হয়েছে। ইস্টার্ন বাইপাস এলাকায় এক প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি এবং তাঁর শাগরেদদের বিরুদ্ধে জমির কারবারের অভিযোগ রয়েছে। ডাম্পিং গ্রাউন্ডের সামনে থেকে একেবারে গোরা মোড় পর্যন্ত সরকারি, বেসরকারি জমির নকল নথি বানিয়ে হাতবদলের অভিযোগ রয়েছে। এই জমির কারবারে গুলি পর্যন্ত চলেছে এলাকায়। ফুলবাড়ির দিকেও প্রচুর জমি হাতবদল হয়েছে। সরকারি জমি বেদখল হয়েছে পোড়াঝাড় এলাকায়। অভিযোগ, একের পর এক তিস্তা ব্যারেজের জমি দখল করে বিক্রি করা হয়েছে। একেকটি জমি একাধিকবার হাতবদলও হয়েছে। স্ট্যাম্প পেপারে লিখেই কাজ হয়েছে। সেখানে একাধিক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার মদত ছিল বলে অভিযোগ। পেছন থেকে পুলিশ প্রশাসনেরও একাংশের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তিস্তা ব্যারেজেরও কর্মীদের একাংশের এর সঙ্গে যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ।

পুলিশ সূত্রে খবর, বাগরাকোট, নৌকাঘাট, শক্তিগড়, পোড়াঝাড়, ফুলবাড়ি স্যাটেলাইট টাউনশিপ এলাকার একাধিক নেতার নাম রয়েছে পুলিশের তালিকায়। ফুলবাড়ির স্যাটেলাইট টাউনশিপ এলাকার ওই নেতা আবার পৈতৃক সম্পত্তি দাবি করে তিস্তার ব্যারাজের বিঘার পর বিঘা জমি দখল করে রেখেছেন। এদের সকলের গতিবিধির ওপরেই নজর রাখা হচ্ছে বলে খবর।