চাঁচল: চাঁচলে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজে জমিজট অব্যাহত। চলতি মাসের ১৮ তারিখ জমির ন্যায্যমূল্যের দাবিতে ভাকরি এলাকায় কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান জমিদাতারা। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জমির মূল্য দেয়নি। বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও হয়নি সুরাহা। তাই জমির ন্যায্যমূল্য না পাওয়া পর্যন্ত জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ করতে দেবেন না তারা। যার ফলে ভাকরি থেকে হাতিন্দা পর্যন্ত প্রায় ২.৫ কিলোমিটার রাস্তার কাজ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। জমিজট কাটাতে মঙ্গলবার চাঁচলে আসেন খোদ জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া। চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের সদভাব ভবনে মহকুমা শাসককে সঙ্গে নিয়ে জমিদাতা এবং ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন দীর্ঘক্ষণ। কিন্তু সেই আলোচনায় সন্তুষ্ট নন জমিদাতারা। বুধবার বিকেলে ভাকরি, খেলেনপুর, হাতিন্দা এবং চাঁচল এলাকার প্রায় শতাধিক জমিদাতা চাঁচল স্টেডিয়াম থেকে মিছিল করে এসে মহকুমা শাসকের দপ্তরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন। তারপরে মহকুমা শাসকের কাছে গিয়ে ৯ দফা দাবিতে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
জমিদাতা দেবব্রত সিংহের অভিযোগ, জমি অধিগ্রহণের সময় ভূমি দপ্তরের যে সকল আধিকারিকরা সার্ভে করতে এসেছিলেন তারা ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন। ২০১৫ সালে আমাদের জমি নেওয়া হয়েছিল। বাজার মূল্যের চার গুণ বেশি দাম দেওয়ার কথা বলেছিল সরকার। সেখানে অনেক কম দেওয়া হয়েছে। আবার আমার জমির মূল্য প্রতি শতকে পেয়েছি ২০ হাজার। আমার পাশের জমি যার সে পেয়েছে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার। এই সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
এদিকে সমগ্র ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে চাপানউতর। উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, ‘কেন্দ্র সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার চেষ্টা করছে প্রতিনিয়ত। দেশজুড়ে চলছে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ। কিন্তু এর জন্য রাজ্য সরকারের সহযোগিতাও দরকার। এখানে রাজ্য সরকারের ভ্রান্ত নীতির জন্য এই অবস্থা। আন্দোলনকারীরা আমার কাছেও এসেছিল। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মূল্য তো দেয়নি। উলটে একই জমির ক্ষেত্রে মূল্য নিয়ে বৈষম্য করা হয়েছে। চাঁচল বিধানসভার বিধায়ক নিহাররঞ্জন ঘোষের দাবি, কৃষকরা কোনও ভাবে বঞ্চিত হবে না। জেলাশাসক নিজের ব্যাপারটি দেখছেন। যেটা সমস্যা রয়েছে সেটা সমাধান হবে। কিন্তু খগেন মুর্মুও তো এখানকার জনপ্রতিনিধি। উনি নিজে কেন এসে সমাধান করছেন না।