রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি পুরনিগমকে (SMC) না জানিয়ে শহরে ২৫০টি খুঁটি বসাতে একটি সংস্থাকে টেন্ডার দিয়েছে মেট্রোপলিটান পুলিশ। সূত্রের খবর, ইসলামপুরের ওই সংস্থা প্রতিটি খুঁটিতে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং লাগাবে। এদিকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, পুর এলাকায় কোথাও কোনওরকম বিজ্ঞাপন দিতে গেলে আগে পুরনিগমের অনুমতি নিতে হয়। ওই বিজ্ঞাপন বাবদ জমা দিতে হয় নির্দিষ্ট ফি। অথচ এক্ষেত্রে প্রথমে অনুমতি পর্যন্ত নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
সপ্তাহখানেক আগে নর্থবেঙ্গল অ্যাড এজেন্সি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মেয়র পারিষদ রাজেশপ্রসাদ শা-র সঙ্গে দেখা করতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। সেসময় রাজেশ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এধরনের বিজ্ঞাপনের অনুমতি তাঁরা দেননি। সঙ্গে সঙ্গে মেয়র গৌতম দেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। মেয়র ডিসি ট্রাফিক বিশ্বচাঁদ ঠাকুরের সঙ্গে কথা বলেন। এরপরই টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থার। তড়িঘড়ি পুরনিগমের কাছে অনুমতি চেয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়।
এই ইস্যু নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি পুরনিগম ও পুলিশের মধ্যে সমন্বয়ের খামতি রয়েছে? মেয়র পারিষদের বক্তব্য, ‘আমরা ওই বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং লাগানোর অনুমতি দিইনি এবং আগামীতেও দেব না। বাকিটা মেয়র দেখছেন।’ গৌতম বললেন, ‘আমার সঙ্গে একবার ডিসি ট্রাফিকের কথা হয়েছে। ওরা ২৫০টি পোল বসাতে চেয়েছে। আমরা অ্যাডের ম্যাটার এবং সাইজ জানতে চেয়েছি। এখনও পর্যন্ত এটুকু কথা হয়েছে।’ শিলিগুড়ির ডেপুটি কমিশনার (ট্রাফিক) বিশ্বচাঁদ ঠাকুর অবশ্য বললেন, ‘আমাদের সিসিটিভি ক্যামেরা মেরামত, ভাঙা পোল পালটানোর জন্য এজেন্সি নিয়োগ করা হয়েছে। ওরা কোনও খুঁটিতে বিজ্ঞাপন লাগালে পুরনিগমের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে করবে।’
শহরে একাধিক রাস্তার সম্প্রাসারণ চলছে। কাজ করতে গিয়ে সড়কের ধার থেকে তুলে ফেলতে হয়েছে একাধিক পোল। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় লাগানো পুলিশের সিসিটিভি ক্যামেরা বিকল অবস্থায় পড়ে। তাই সম্প্রতি শিলিগুড়ি ট্রাফিক পুলিশ নতুন পোল বসানো এবং সিসিটিভি ক্যামেরা সারাইয়ের জন্য একটি এজেন্সিকে টেন্ডার দেয়। কাজ শুরুর আগে পুরনিগমের থেকে অনুমতি না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে।
বছর তিনেক আগেও সিগন্যাল লাইট বসানো নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিল শিলিগুড়ি ট্রাফিক পুলিশ। ওইসময় শহরে কয়েকশো পোল বসানো হয়। পোল বসানো এবং তাতে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং লাগানো নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। তৎকালীন পুলিশ কমিশনারকে অন্ধকারে রেখে কাজ হয়েছিল বলে অভিযোগ। দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয় তৎকালীন পুলিশ কমিশনার এবং তৎকালীন ডিসিপি ট্রাফিকের মধ্যে। শেষপর্যন্ত সমস্ত পোল সরিয়ে দিতে হয়েছিল।