কোচবিহার: প্রায় চার মাস ঘুমোনোর পর বুধবার দ্বাদশী তিথিতে কোচবিহারের ছোট মদনমোহন জেগে উঠবেন। ওইদিন ঘুম থেকে উঠে তিনি জল, গঙ্গাজল, ডাবের জল, দুধ, দই, মধু, ঘি দিয়ে সহস্রধারায় স্নান করবেন। তারপর মূল মদনমোহনের ডানপাশেই স্থান গ্রহণ করবেন। রথযাত্রায় মূল মদনমোহন যখন মাসির বাড়ি বেড়াতে যান তখন সিংহাসনের দায়িত্ব সামলান ছোট মদনমোহন। এরপর রথযাত্রার পরবর্তী দ্বাদশী তিথিতে তিনি প্রায় চার মাসের জন্য ঘুমোতে যান। রাজ আমল থেকেই এই নিয়ম চলে আসছে। দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের অন্যতম সদস্য তথা সদর মহকুমা শাসক কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ঐতিহ্য মেনেই ছোট মদনমোহনের ঘুম থেকে ওঠার নিময়কানুন পালন করা হবে।
মদনমোহনকে কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর বলা হয়। ধর্মীয় রীতির ক্ষেত্রে এখানে বেশকিছু বৈচিত্র্য রয়েছে। যা রাজ আমল থেকে একই নিয়মে পালন হয়ে আসছে। ছোট মদনমোহনের ঘুম ভাঙাটাও সেরকমই এক নিয়ম। বৈরাগীদিঘির পাড়ে মদনমোহন ঠাকুরবাড়িতে দুজন মদনমোহন রয়েছেন। একজন মূল মদনমোহন। আরেকজন ছোট মদনমোহন। অন্য সময় দুজনকে একই জায়গায় দেখা গেলেও রথযাত্রার পর থেকে রাসযাত্রার আগের দ্বাদশী তিথি পর্যন্ত ছোট মদনমোহন গর্ভগৃহের একটি বিশেষ জায়গায় ঘুমিয়ে থাকেন। রাজপুরোহিত হীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের কথায়, ‘১০৮ কলস জল দিয়ে ছোট মদনমোহনকে স্নান করানো হবে। বিশেষ পুজোও চলবে।’ প্রতিবছর ছোট মদনমোহনের এই স্নানপর্ব দেখতে বহু পুণ্যার্থী ভিড় করেন।
রাসযাত্রা উপলক্ষ্যে বর্তমানে মদনমোহনবাড়িকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। রাসচক্র, পূতনা রাক্ষসী তৈরির কাজ চলছে। মদনমোহন ঠাকুরবাড়িকে রং করে আলো বসানো হচ্ছে। ১৫ নভেম্বর মদনমোহনের রাসযাত্রা হবে। সেটিকে কেন্দ্র করেই মেলা বসবে। তার আগে আরেক ধর্মীয় রীতিকে কেন্দ্র করে এখন মদনমোহন ঠাকুরবাড়িজুড়ে সাজোসাজো রব।