সামসী: নিকাশিনালা সংস্কারের নামে লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। চাঁচল শহর লাগোয়া বারোগাছিয়া গ্রামের ঘটনা।
চাঁচল তরলতলা থেকে বারোগাছিয়া জাগরণী ক্লাব পর্যন্ত নিকাশিনালাটির বেহাল অবস্থা। ভেঙে গিয়েছে নিকাশির ঢাকনা। জল উপচে পড়ছে রাস্তায়, ঢুকছে বাড়িতেও। নোংরা জলের ওপর দিয়েই যাতায়াত করতে হয় বারোগাছিয়া সহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের। পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনকের সমস্যা কথা জানানো হলেও সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। তাই প্রতিবাদে শুক্রবার স্থানীয়রা একজোট হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। স্থানীয়রা জানান, পঞ্চায়েত ভোটের আগে নিকাশিনালা সংস্কার না করা হলে ভোট বয়কটও করতে পারেন তাঁরা।
এদিন বিক্ষোভে শামিল বারোগাছিয়া বুথের পঞ্চায়েত(সিপিএম) সদস্য মজিমুল হক জানান, বাসিন্দাদের মূল সমস্যা হচ্ছে নিকাশি ব্যবস্থা। জল নিকাশির ব্যবস্থা থাকলেও সেই নিকাশি নালা দিয়ে জলের বদলে জমে রয়েছে নোংরা আবর্জনা এবং বর্জ্য পদার্থ। নিকাশি নালার মুখ বুজেছে সেই বর্জ্য পদার্থে। ঢাকনা না থাকার কারণে তা ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে। সংস্কারের কোনও বালাই নেই। একটু বৃষ্টি হলেই বেহাল নিকাশির জল উপচে রাস্তায় ও বাড়িতে ঢুকে পড়ছে। মজিমুল হক এই নিয়ে ১১ মে চাঁচল পঞ্চায়েত, ব্লক ও মহকুমা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর আরও অভিযোগ, বারোগাছিয়ার বেহাল নিকাশিনালা সংস্কারের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা বিল করা হয়েছে কয়েক দফায়। তবুও নিকাশিনালা সংস্কার করা হয়নি। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের দখলে পঞ্চায়েত। আর তিনি যেহেতু বিরোধী পঞ্চায়েত সদস্য তাই তাঁর বুথে কোনও কাজ হয়নি। সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। গোটা বিষয়টি ব্লক দপ্তরে লিখিত আকারে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে নাগরিক পরিষেবা না মেলায় একযোগে শাসকদলের পঞ্চায়েতকে আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধীরা। চাঁচল-১ ব্লক কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের ওন ফান্ডের টাকা তছরুপ করা হয়েছে। মানুষের কোনও কাজ করে না এরাঁ। শুধু টাকার ভাগ নিতে আসে পঞ্চায়েতে আসে।’
মালদা উত্তরের বিজেপির সংগঠনিক জেলার সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত জানান, চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের ক্লাব ঘরে পরিণত হয়েছে। সেখানে কোনও কাজ হয় না। মানুষকে বঞ্চনা ও নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত রেখেছে চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েত।
তৃণমূল পরিচালিত চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান উৎপল তালুকদার যদিও সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে এবং ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘এলাকায় যথেষ্ট কাজ হয়েছে। তবে নিকাশির সমস্যা রয়েছে। দ্রুত বারোগাছিয়ার নিকাশি ব্যবস্থার সমাধান করা হবে।’