অরুণ ঝা, ইসলামপুর: ‘যারে উড়ে যারে পাখি… শেষ হয়ে এল বেলা’- কিংবদন্তি লতার এই গান রায়গঞ্জ (Raiganj) আসনের লক্ষাধিক পরিযায়ী শ্রমিকের (Migrant Worker) সঙ্গে যেন এবারের ভোটে (Lok Sabha Election 2024) মিলেমিশে একাকার। গণতন্ত্রের মহোৎসবের বেলা শেষ হতে চললেও পেটের দায়ে বাইরে কর্মরত প্রান্তিক পরিযায়ীদের নিয়ে শাসক থেকে বিরোধী কারও কোনও মাথাব্যথা নেই।
গোয়ালপোখরের শ্রীপুরের নির্মল বিশ্বাস সিকিমে কাজ করেন। ফোনে ধরতেই নির্মল বললেন, ‘ভিনরাজ্যে থেকে অনেক কষ্টে সংসার টানতে হয়। নেতাদের যদি আমাদের ভোট নিয়ে চিন্তা না থাকে, আমরা পকেট কেটে টাকা খরচ করে ভোট দিতে যাব কেন?’
পরিযায়ীদের ভোট নিয়ে এবার যে তাঁরা মাথা ঘামাচ্ছেন না তা একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন বিজেপি, তৃণমূল এবং সিপিএম-কংগ্রেসের অঘোষিত জোটের নেতারাও। একধাপ এগিয়ে মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলছেন, ‘মোদি ট্রেনের ভাড়া এতটাই বাড়িয়ে দিয়েছেন যে পরিযায়ী শ্রমিকরা ভোট দিতে আসতে পারছেন না। তবে ইদে যাঁরা বাড়ি এসেছিলেন তাঁদের ভোট দিয়েই যেতে বলা হয়েছে। কারণ এরপর তাঁরা আর ভোট দিতে পারবেন কি না তা নিয়ে যে সন্দেহ রয়েছে, সেটা তাঁদের বোঝানো হয়েছে।’
মন্ত্রীর করা ‘মগজধোলাই’ কতটা কাজে লাগবে তা ভোটের ফলাফল বলবে। কিন্তু মন্ত্রীর সঙ্গে বিরোধীরাও পরিযায়ীদের নিয়ে আসা অত্যন্ত খরচসাপেক্ষ বলে মাথা ঘামাচ্ছেন না তা স্পষ্টত স্বীকার করেছেন সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য বিকাশ দাস ও বিজেপির জেলা সহ সভাপতি সুরজিৎ সেন।
ভোটে লড়তে একজন প্রার্থী কোটি কোটি টাকা ভোটের বাজারে উড়িয়ে দেন বলে চর্চা চলে। কিন্তু তাঁদের বাজেটে এবার পরিযায়ীদের আনার জন্য কোনও বরাদ্দ নেই। সংসারের ঘানি টানতে ব্যস্ত পরিযায়ীরাও ভোট নিয়ে তাই উৎসাহ দেখাননি।
চাকুলিয়ার (Chakulia) বলঞ্চা এলাকার আনোয়ার আলম রাজস্থানে থাকেন। ফোনে ভোট নিয়ে প্রশ্ন করতেই আনোয়ার বললেন, ‘জব কার্ড করে দেবে বলে নেতারা এক বছর আগে নথি নিয়েছিল। কার্ডও হয়নি। ব্যাংকে টাকা ঢোকা তো দূর অস্ত। ভোট নিয়ে ব্যস্ত নেতারা এবার আমাদের ভুলে গিয়েছেন। মোটা টাকা খরচ করে ভোট দিতে যাওয়ার চাইতে সংসারকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি।’
বেঙ্গালুরুতে থাকেন ইসলামপুরের কোদালদহের বাসিন্দা আকবর আলি। আকবরের সাফ কথা, ‘একই এলাকার আমরা ৩৬ জন একসঙ্গে এখানে কাজ করি। কোনও দল যোগাযোগ করেনি। ফলে নিজেদের স্ত্রী, সন্তান ও পরিবারের জন্য রাখা অর্থ খরচ করে ভোট দিতে যাওয়া আমাদের কাছে বিলাসিতা। তাই ভোট দেওয়া হবে না।’
চোপড়ার কলুগছের বাসিন্দা রাকেশ আলমের ক্ষেত্রে চিত্রটি অবশ্য ভিন্ন। তাঁকে তৃণমূল নেতারা ভোলেননি। রাকেশ বলছেন, ‘পরিবার চালাতে আমরা অনেকেই কেরলে থাকি। তৃণমূলের তরফে ফোন করে ভোট দিতে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু যাওয়া আসার খরচ নিয়ে কেউ কোনও দায়িত্ব নেয়নি। ফলে আমরা ভোট দিতে যাচ্ছি না।’
ইসলামপুর মহকুমার লক্ষাধিক ভোটার পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে ভিনরাজ্যে কাজ করেন। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলির কাছে এবার তাঁরা ব্রাত্য হয়ে উঠেছেন। শুক্রবার ভোট। গণতন্ত্রের মহোৎসবে কোটি কোটি টাকা উড়লেও পরিযায়ী শ্রমিকদের বঞ্চনা ঘোচার নাম নেই।
পতিরাম: এ যেন ফিল্মি কায়দায় চুরি। পরিবারকে গ্যাস স্প্রে করে অচৈতন্য করে বাড়ির সর্বস্ব চুরি…
কালিয়াচক: কালিয়াচকের রাজনগর মডেল গ্রামে বোমা বিস্ফোরণের পর আরও এক জার বোমা উদ্ধার (Bomb recovered)…
বিশ্বজিৎ সরকার, করণদিঘি: মাইনোরিটি স্কলারশিপের (Minority Scholarship Scam) কোটি কোটি টাকা তছরুপের দায়ে অভিযুক্ত মহম্মদ…
রাহুল দেব, রায়গঞ্জ: আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও খুনের চেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার(Arrest) করেনি পুলিশ। এলাকায় বহালতবিয়তে…
দুর্গাপুর: বাংলাদেশে পাচারের পথে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের(STF) জালে ধরা পড়লো বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ…
অরিন্দম বাগ, মালদা: সামান্য বৃষ্টি, হালকা হাওয়া আর মুহুর্মুহু বজ্রপাত। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাতেই প্রাণ হারিয়েছেন…
This website uses cookies.