নাগরাকাটা: রাজ্যজুড়ে সবুজ ঝড়ের মাঝেও তৃণমূল কংগ্রেস ফের আটকে গেল আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে। দুই কেন্দ্রেই চা শ্রমিকদের ভোট যে নির্ণায়ক ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায় তা বহুল প্রমাণিত। ফলাফলের প্রাথমিক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, বহু বাগানেই ঘাসফুল শিবিরের জয়রথ আটকে গিয়েছে সেই বাগান কাঁটাতেই। তবে একথাও অনস্বীকার্য, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে পরাজয়ের যে ব্যবধান ছিল তা কয়েকগুণ কমাতে পেরেছে তৃণমূল। দিনের শেষে কাঙ্ক্ষিত জয় না মেলায় এখন মুখ ভার দুই জেলার নেতাদেরই।
আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা মিলিয়ে চা বাগানের সংখ্যা ১১১টি। মোট বুথ ৪৫৩। অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে বড় চা বাগান রয়েছে ৪১টি। বুথের সংখ্যা ১২০টির মতো। বেশ কয়েকটি বাগানের ফল যে আশানুরূপ নয়, তা তৃণমূল সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুয়ায়ীই পরিষ্কার। যেমন মেটেলির সামসিং চা বাগানের ৫ নম্বর বুথ থেকে তৃণমূল পেয়েছে ২৪৭টি ভোট। অন্যদিকে, বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে ২৬৩টি ভোট। সেখানকারই ২ নম্বর বুথ থেকে তৃণমূল ও বিজেপির প্রাপ্ত ভোট যথাক্রমে ১০৪ ও ৪৫০। আইভিল চা বাগানের ৪৭ নম্বর বুথে তৃণমূল ও বিজেপির প্রাপ্ত ভোট যথাক্রমে ৩৪৬ ও ৪২৮। বানারহাটের দেবপাড়া চা বাগানের ২১৫ নম্বর বুথ থেকে দুই দল পেয়েছে যথাক্রমে ৯৮ ও ৩২৭ ভোট। কাঁঠালগুড়ি চা বাগানের ২৫৭ নম্বর বুথে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ২৩১। সেখানে বিজেপি পেয়েছে ৩৫০টি ভোট। এমন বুথ আরও রয়েছে।
এবার আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে মোট ভোটের হার ৭৯.৭৬ শতাংশ। জলপাইগুড়িতে ৮৩.৬৬ শতাংশ। চা বাগানগুলিতে মূলত আদিবাসী ও গোর্খা সম্প্রদায়দের বসবাস। ধর্মীয় দিক থেকে তাঁরা খ্রিস্টান, হিন্দু, মুসলিম ও বৌদ্ধ। জাতি বা ধর্মগত কোনও ফ্যাক্টর চা বাগানের ভোটে কস্মিনকালেও কাজ করে না বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। এখানে ট্রেড ইউনিয়ন যার যত শক্তিশালী, ভোট বাক্সেও তার প্রভাব তত বেশি। এবছর আলিপুরদুয়ার কেন্দ্র থেকে টিকিট না পেয়ে জন বারলা প্রথমদিকে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসেন। বারলার সাংগঠনিক প্রভাব দুই জেলার বাগানেই রয়েছে। তবে তৃণমূল যে এর পুরো ফায়দা নিতে ব্যর্থ, তা ভোটের ফলাফলেই পরিষ্কার। এমন প্রশ্নও উঠে আসতে শুরু করেছে, চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা সহ বাড়ি তৈরির ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা প্রদান, মজুরি বাড়িয়ে ২৫০ টাকা করা, বিভিন্ন বাগানে ক্রেশ ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির সরকারি প্রকল্পগুলির কথা তবে কি দলের নেতারা শ্রমিক মহল্লায় পৌঁছে দিতে ব্যর্থ হয়েছেন! খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত চালসায় বেশ কয়েকদিন ঘাঁটি গেড়ে চা বলয়ে তাঁর নিজস্ব শৈলিতে প্রচার ও জনসংযোগ চালিয়ে গিয়েছিলেন।
তবে প্রচারে কোনও ফাঁকফোঁকর বা সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা মানছেন না তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নকুল সোনার বা ব্রিগেড মঞ্চে বক্তব্য রাখা আরেক শ্রমিক নেতা সঞ্জয় কুজুর। নকুলবাবু বলেন, ‘গতবারের বিপুল ব্যবধান অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে চা শ্রমিকদের ভোট প্রাপ্তির মাধ্যমেই। ফল বিশ্লেষণ না করে বিশদে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।’ সঞ্জয়ের কথায়, ‘রাজনৈতিক জয় আমাদেরই। শ্রমিকরা ভোট দিয়েছেন বলেই জয়ের কাছাকাছি পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।’ বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভুজেল বলছেন, ‘চা শ্রমিকদের তৃণমূল শুধু ললিপপ দেখিয়েছে। শ্রমিকরা তা বুঝতে পেরেই আমাদের পাশে থেকেছেন।’
সানি সরকার, শিলিগুড়ি: তিস্তার(Teesta) জলের দিকে নজর থাকে ওঁদের। রাস্তা থেকে জল নামলেই তিস্তাবাজারের বাসিন্দারা…
সানি সরকার, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গের পর্যটন প্রসারে প্রয়োজন বন এবং পর্যটন দপ্তরের সমন্বয়, এই প্রস্তাব গুরুত্ব…
শিলিগুড়ি: এবার ভূমিধস সেবকে। আজ সকালে ভূমিধসের জেরে একটা বড় গাছ উপড়ে পড়ে ১০ নম্বর…
ওয়াশিংটন: তিনি যে ক্রমে হাসির খোরাক হয়ে উঠেছেন, সেটা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন জো বাইডেন (Joe…
তেহরান: ইরানের (Iran) নবম প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন সংস্কারপন্থী নেতা মাসুদ পেজেশকিয়ান (Masoud Pezeshkian)।…
তিরুবনন্তপুরম: অণুবীক্ষণেও প্রায় ধরা পড়ে না এমন এককোষী একটি প্রাণি। আর সেটাই এখন ত্রাসের সঞ্চার…
This website uses cookies.